কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি গ্রামে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। বর্তমানে শিশুটি কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পরপরই থানায় অভিযোগ না করে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ‘সালিসে’ নিষ্পত্তির চেষ্টা করে গ্রামের প্রভাবশালীরা। তারা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে জনসম্মুখে চড়-থাপ্পড় দিয়ে সালিস শেষ করে দেন বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তবে স্থানীয় মেম্বার ও সমাজপ্রধানরা বলছেন, তারা পরিবারটিকে মামলা করতে বলেছিলেন, কিন্তু পরিবার থানায় যেতে চায়নি।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা হলে জানান, গত ১২ জুন সকালে তিনি তার মাকে এগিয়ে দিতে বাড়ির বাইরে যান। এ সুযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি (যিনি সম্পর্কে দাদা হন) শিশুটিকে নিজের বাড়িতে ডেকে নেন। কিছু সময় পর শিশুটি খুঁড়িয়ে বাড়ি ফিরে আসে। পরে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, ‘বিশা দাদা আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে।’
সালিসে চড়-থাপ্পড়ে মুক্তি
বিষয়টি গ্রামের মুরুব্বিদের জানালে তারা পরদিন বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে বাড়ির ওপর সালিস বসায়। সালিসে বিশাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে মাতুব্বরেরা বলে যে সালিস শেষ। পরদিন শুক্রবার (১৩ জুন) মেয়ে পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।’
থানায় অভিযোগ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শিশুটির মা বলেন, ‘বাচ্চাটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে থানায় যাইনি। মেম্বর ও সমাজপ্রধান বলেছে, আগে চিকিৎসা নিয়ে আসো। তারপর মামলা করতে সব ধরনের সহযোগিতা করব। আমিও মামলা করব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাটিকাবাড়ী ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নুরনবী বলেন, ‘ওসি স্যারের নির্দেশে হাসপাতালে গিয়েছি। শিশুটির চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসা শেষে পরিবারকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হোসেন ইমাম জানান, শিশুটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে এবং তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন: স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন
স্থানীয় সমাজপ্রধান রহিম মণ্ডল বলেন, ‘সামাজিকভাবে একটা মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। অভিযুক্তকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছিল। তবে আমি তাদের মামলাও করতে বলেছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মতিউর রহমান জানান, ‘ঘটনাটি জানার পর শিশুটির পরিবারকে মামলা করতে বলেছিলাম। তারা যায়নি। তবে সালিসে চড়-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তির ভাই-ভাতিজারা। আমি শুধু উপস্থিত ছিলাম।’