২০০১ সালে বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন, ৯ জনের ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৩ মে) এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেন। এদিকে হাইকোর্টের দেওয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষ।
রমনা বটমূলে বোমা হামলা: ২ জনের যাবজ্জীবন, বাকিদের ১০ বছর কারাদণ্ড
আদালতের রায়ে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড থেকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন এবং নয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন থেকে কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একজনের ফাঁসি এবং দুজন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করায় তাদের বিষয়টি রায় ঘোষণায় আসেনি।
রায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. তাজউদ্দিনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন এবং বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত শাহাদাতউল্লাহ জুয়েলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
আর বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আকবর হোসেন, আরিফ হাসান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই, শফিকুর রহমান এবং বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাব্বির, শেখ ফরিদ ও আবু তাহেরের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তবে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান (সিলেটে গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর) এবং বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুর রউফ ও ইয়াহিয় মারা যাওয়ায় তাদের বিচারিক কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ এবং আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।
রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষে সুলতানা আক্তার রুবী সাংবাদিকদের বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর এর বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হবে।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার শুনানি শেষ হয়ে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন (সিএভি)। পরে ৮ মে রায়ের জন্য দিন ঠিক করা হয়। সে অনুসারে গত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা শুরু করেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার চূড়ান্ত রায়ে সাজা ঘোষণা শেষ হয়।
রমনা বটমূলে বোমা হামলা
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ঘটনাস্থলেই নয়জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান একজন। এ ঘটনায় রাজধানীর নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। এরপর ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলায় রায় দেন ঢাকার আদালত। রায়ে বিচারিক আদালত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।