১২:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৯:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • 30

আওয়ামী লীগের সব ধরনের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এবার রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের নিবন্ধনও স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর রাত সোয়া ৯টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসেন জ্যেষ্ঠ ইসি সচিব আখতার আহমেদ। ব্রিফিংয়ে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত ইসির

আখতার আহমেদ বলেন, ‘আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ইলেকশন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হলো। সে অনুযায়ী আজকে আমরা গেজেট নোটিফিকেশনে জারি করেছি, আপনারা গেজেটের কপিটা বিজি প্রেস থেকে পেয়ে যাবেন।’

কোন গ্রাউন্ডে এই নিবন্ধন স্থগিত করা হলো—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন, তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটি করেছি।’

পরে রাতে নির্বাচন কমিশন থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯–এর ধারা-১৮(১)–এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেহেতু বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল।

এর ফলে ছয় মেয়াদে দুই যুগের বেশি সময় সরকারে থাকা দেশের অন্যতম প্রাচীন এ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে গেল।

এর আগে, রবিবার (১১ মে) জুলাই আন্দোলন দমনে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও এ অঙ্গসংগঠনগুলোকে বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আ.লীগ নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন

এরপর সোমবার বিকালে আসে নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন। সেখানে বলা হয়, ‘ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।’

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নিয়ম চালু করে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নম্বর ছিল ৬, প্রতীক নৌকা।

গত ১৭ বছরে সব মিলিয়ে ৫৫টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে জামায়াতে ইসলামীসহ পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল থাকল ৪৯টি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত

সর্বশেষ আপডেট : ০৯:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগের সব ধরনের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এবার রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের নিবন্ধনও স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর রাত সোয়া ৯টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসেন জ্যেষ্ঠ ইসি সচিব আখতার আহমেদ। ব্রিফিংয়ে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত ইসির

আখতার আহমেদ বলেন, ‘আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ইলেকশন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হলো। সে অনুযায়ী আজকে আমরা গেজেট নোটিফিকেশনে জারি করেছি, আপনারা গেজেটের কপিটা বিজি প্রেস থেকে পেয়ে যাবেন।’

কোন গ্রাউন্ডে এই নিবন্ধন স্থগিত করা হলো—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন, তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটি করেছি।’

পরে রাতে নির্বাচন কমিশন থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯–এর ধারা-১৮(১)–এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেহেতু বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল।

এর ফলে ছয় মেয়াদে দুই যুগের বেশি সময় সরকারে থাকা দেশের অন্যতম প্রাচীন এ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে গেল।

এর আগে, রবিবার (১১ মে) জুলাই আন্দোলন দমনে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও এ অঙ্গসংগঠনগুলোকে বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আ.লীগ নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন

এরপর সোমবার বিকালে আসে নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন। সেখানে বলা হয়, ‘ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।’

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নিয়ম চালু করে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নম্বর ছিল ৬, প্রতীক নৌকা।

গত ১৭ বছরে সব মিলিয়ে ৫৫টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে জামায়াতে ইসলামীসহ পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল থাকল ৪৯টি।