০১:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘অন্নপূর্ণা–১’ পর্বত জয় করলেন বাবর আলী

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০২:৪৭:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
  • 13

বাবর আলী। ছবি: সংগৃহীত

হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত অন্নপূর্ণা-১ পর্বতের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন বাবর আলী। আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে তিনি এ পর্বতশৃঙ্গে পৌঁছান। সেখানে বাবরের সঙ্গে আছেন গাইড ফূর্বা অংগেল শেরপা।

বাবার আলীর পর্বতশীর্ষে আরোহণের খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান এবং নেপালের অভিযানের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মাকালু অ্যাডভেঞ্চারের সত্ত্বাধিকারী মোহন লামসাল।

পর্বতারোহী বাবর আলী পেশায় চিকিৎসক। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক। গত বছর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একই অভিযানে বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্ট এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ উচ্চতার লোৎসে পর্বত জয় করেন।

অন্নপূর্ণা-১ বিশ্বের দশম সর্বোচ্চ উচ্চতার পর্বত হলেও পর্বতারোহীদের মৃত্যুর হার বিবেচনায় বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক পর্বত হিসেবে পরিচিত। দুর্গম এই পর্বত জয় করতেই গত ২৪ মার্চ বাংলাদেশ থেকে নেপালে গেছেন বাবর আলী। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে কাঠমান্ডু থেকে পোখারা হয়ে ২৮ মার্চ পৌঁছান অন্নপূর্ণা বেজক্যাম্পে। সেখানে একদিন বিশ্রাম নেন। এরপর উচ্চতার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে ক্যাম্প ১–এ (৫২০০ মিটার) দুই রাত এবং ক্যাম্প ২–এ (৫৭০০ মিটার) এক রাত কাটিয়ে আবার ২ এপ্রিল নেমে আসেন বেজক্যাম্পে।

বাবর আলীর সংগঠন এবং এই অভিযানের আয়োজক পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উচ্চতার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানোর পর পর্বতারোহীরা অনুকূল আবহাওয়ার জন্য বেজক্যাম্পে অপেক্ষা করেন। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বাবর আলী জানতে পারেন, সেই অনুকূল আবহাওয়া থাকবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। তাই পরিকল্পনা মোতাবেক ৩ এপ্রিল আবার চূড়ার দিকে উঠতে শুরু করেন তিনি। ওইদিন ক্যাম্প ১–এ থেকে পরদিন উঠে যান ক্যাম্প ২–এ। এর মধ্যেই শুরু হয় তুষারঝড়। প্রতিকূল আবহওয়ার মধ্যেও বাবর পৌঁছে যান ক্যাম্প ৩–এ (৬৫০০ মিটার)। সাধারণত ৭ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতায় ক্যাম্প তৈরি করে পর্বতারোহীরা চূড়ায় আরোহণের চূড়ান্ত পদক্ষেপ (সামিট পুশ) নেন। কিন্তু আবহাওয়া বিবেচনায় বাবর আলী ক্যাম্প-৩ থেকেই সেই পদক্ষেপ ৬ এপ্রিল রাতে।

অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান জানান, ‘অন্নপূর্ণা-১ শীর্ষে পৌঁছানোর মাধ্যমে বাবর আলী বাংলাদেশের পর্বতারোহণের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করেছে। ওর কঠোর পরিশ্রম এবং নিরলস অধ্যবসায়ের প্রতিফলন এই সাফল্য। আমরা আশা করি এই অর্জন বাংলাদেশের পর্বতারোহণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’

ফরহান জামান আরো জানিয়েছেন, বাবর আলী আজই ক্যাম্প ২–এ নেমে আসার চেষ্টা করবেন। সেখানে থেকে আগামীকাল ৮ এপ্রিল নামতে পারেন বেজক্যাম্পে।

উল্লেখ্য, বাবর আলীর অন্নপূর্ণা-১ অভিযানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার্স লিমিটেড, ভিজ্যুয়াল ইকো স্টাইলওয়্যার লিমিটেড, এডিএফ এগ্রো, ফ্লাইট এক্সপার্ট, এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং ব্লু জে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘অন্নপূর্ণা–১’ পর্বত জয় করলেন বাবর আলী

সর্বশেষ আপডেট : ০২:৪৭:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত অন্নপূর্ণা-১ পর্বতের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন বাবর আলী। আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে তিনি এ পর্বতশৃঙ্গে পৌঁছান। সেখানে বাবরের সঙ্গে আছেন গাইড ফূর্বা অংগেল শেরপা।

বাবার আলীর পর্বতশীর্ষে আরোহণের খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান এবং নেপালের অভিযানের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মাকালু অ্যাডভেঞ্চারের সত্ত্বাধিকারী মোহন লামসাল।

পর্বতারোহী বাবর আলী পেশায় চিকিৎসক। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক। গত বছর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একই অভিযানে বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্ট এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ উচ্চতার লোৎসে পর্বত জয় করেন।

অন্নপূর্ণা-১ বিশ্বের দশম সর্বোচ্চ উচ্চতার পর্বত হলেও পর্বতারোহীদের মৃত্যুর হার বিবেচনায় বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক পর্বত হিসেবে পরিচিত। দুর্গম এই পর্বত জয় করতেই গত ২৪ মার্চ বাংলাদেশ থেকে নেপালে গেছেন বাবর আলী। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে কাঠমান্ডু থেকে পোখারা হয়ে ২৮ মার্চ পৌঁছান অন্নপূর্ণা বেজক্যাম্পে। সেখানে একদিন বিশ্রাম নেন। এরপর উচ্চতার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে ক্যাম্প ১–এ (৫২০০ মিটার) দুই রাত এবং ক্যাম্প ২–এ (৫৭০০ মিটার) এক রাত কাটিয়ে আবার ২ এপ্রিল নেমে আসেন বেজক্যাম্পে।

বাবর আলীর সংগঠন এবং এই অভিযানের আয়োজক পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উচ্চতার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানোর পর পর্বতারোহীরা অনুকূল আবহাওয়ার জন্য বেজক্যাম্পে অপেক্ষা করেন। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বাবর আলী জানতে পারেন, সেই অনুকূল আবহাওয়া থাকবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। তাই পরিকল্পনা মোতাবেক ৩ এপ্রিল আবার চূড়ার দিকে উঠতে শুরু করেন তিনি। ওইদিন ক্যাম্প ১–এ থেকে পরদিন উঠে যান ক্যাম্প ২–এ। এর মধ্যেই শুরু হয় তুষারঝড়। প্রতিকূল আবহওয়ার মধ্যেও বাবর পৌঁছে যান ক্যাম্প ৩–এ (৬৫০০ মিটার)। সাধারণত ৭ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতায় ক্যাম্প তৈরি করে পর্বতারোহীরা চূড়ায় আরোহণের চূড়ান্ত পদক্ষেপ (সামিট পুশ) নেন। কিন্তু আবহাওয়া বিবেচনায় বাবর আলী ক্যাম্প-৩ থেকেই সেই পদক্ষেপ ৬ এপ্রিল রাতে।

অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান জানান, ‘অন্নপূর্ণা-১ শীর্ষে পৌঁছানোর মাধ্যমে বাবর আলী বাংলাদেশের পর্বতারোহণের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করেছে। ওর কঠোর পরিশ্রম এবং নিরলস অধ্যবসায়ের প্রতিফলন এই সাফল্য। আমরা আশা করি এই অর্জন বাংলাদেশের পর্বতারোহণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’

ফরহান জামান আরো জানিয়েছেন, বাবর আলী আজই ক্যাম্প ২–এ নেমে আসার চেষ্টা করবেন। সেখানে থেকে আগামীকাল ৮ এপ্রিল নামতে পারেন বেজক্যাম্পে।

উল্লেখ্য, বাবর আলীর অন্নপূর্ণা-১ অভিযানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার্স লিমিটেড, ভিজ্যুয়াল ইকো স্টাইলওয়্যার লিমিটেড, এডিএফ এগ্রো, ফ্লাইট এক্সপার্ট, এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং ব্লু জে।