০৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

আন্দোলনে স্থবির ঢাকার সড়ক, তীব্র ভোগান্তিতে নগরবাসী

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০১:০০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
  • 17

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার লোক। এরই মধ্যে তিন দফা দাবিতে বুধবার থেকে টানা আন্দোলনে নেমেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতেও দুদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে যানজটে স্থবির হয়ে পড়ছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক। চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছেন নগরবাসী।

জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কাকরাইল সড়কে বন্ধ গতকাল বুধবার থেকেই। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে এদিন বিকেলে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার হলেও আজ বৃহস্পতিবার আবার অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এর ফলে সকাল ৮টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছড়িয়ে পড়েছে যানজট।

রাজধানীর গুলিস্তনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সুমন কর্মকার। ভোগান্তি ভেবেই মিরপুর থেকে মোটরসাইকেল রেখে মেট্রোরেলে রওনা দেন অফিসের উদ্দেশ্যে। সচিবালয় মেট্রো স্টেশনে নামার পর রিকশা নেন। তাতেই যেন বাধে বিপত্তি। সামনে যে সড়ক বন্ধ। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে আন্দোলন অবরোধে সড়ক বন্ধ যান চলাচল। আধাঘণ্টায়ও কূলকিনারা না পেয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে রাজধানীতে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।

আজ বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ দিন। এমনিতেই বৃহস্পতিবার মানে ঢাকা শহরে যানবাহনের বাড়তি চাপ যানজট ভোগান্তি থাকে। তার মধ্যে ঢাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে। রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান। অন্যদিকে ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো গুলিস্তানে ডিএসসিসি কার্যালয়ের সামনের সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন চলছে।

সকাল ১০টা থেকে সরেজমিনে ও বিভিন্ন সড়কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর মহাখালী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, তেজগাঁও, মগবাজার, মালিবাগ, পল্টন, শাহবাগ, কাকরাইল মোড়, গুলিস্তান, মতিঝিলজুড়ে কোথাও তীব্র যানজট আবার কোথাও গাড়ির চাপ অনেক। অনেক স্থানের যাত্রীদের গণপরিবহন থেকে নেমে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হেঁটে যেতে দেখা যায়।

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে ফুলবাড়িয়া এলাকায় অটোরিকশায় আসতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে নাদিয়া শারমিন নামের একজন গণমাধ্যমকর্মীর। তিনি বলেন, সড়কের মাঝে মাঝে অবরোধ করে বন্ধ রাখা হয়েছে সড়ক। রিকশা চলার মতো রাস্তাও ফাঁকা নেই। অনেক মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

যানজটের বিষয়ে ট্রাফিক রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার মানেই বাড়তি চাপ। এদিন এমনিতেই সড়কে তীব্র চাপ তৈরি হয়। তারমধ্যে আজও গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থানে সড়কে যান চলাচল বন্ধ। এ কারণে সড়কে সকাল থেকেই চাপ। সে চাপ অধিকাংশ স্থানে যানজট তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, অফিসগামীযাত্রী, পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টায় বিভিন্ন পয়েন্টে ডাইভারশন করা হয়েছে। গুলিস্তান মতিঝিল গন্তব্য হলে নীলক্ষেত নিউমার্কেট সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানান তিনি।

ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলামোটর-হেয়ার রোড দিয়ে ডাইভারশন করা হয়েছে। কাকরাইলের সড়ক ক্লিয়ার করতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা শুনছেন না বরং তাদের সংখ্যা বাড়ছে। যানজট ভোগান্তিতে পড়া নগরবাসীকে বিকল্প সড়ক ও ডাইভারশন মেনে চলাচল অনুরোধ করা হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

আন্দোলনে স্থবির ঢাকার সড়ক, তীব্র ভোগান্তিতে নগরবাসী

সর্বশেষ আপডেট : ০১:০০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার লোক। এরই মধ্যে তিন দফা দাবিতে বুধবার থেকে টানা আন্দোলনে নেমেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতেও দুদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে যানজটে স্থবির হয়ে পড়ছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক। চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছেন নগরবাসী।

জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কাকরাইল সড়কে বন্ধ গতকাল বুধবার থেকেই। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে এদিন বিকেলে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার হলেও আজ বৃহস্পতিবার আবার অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এর ফলে সকাল ৮টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছড়িয়ে পড়েছে যানজট।

রাজধানীর গুলিস্তনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সুমন কর্মকার। ভোগান্তি ভেবেই মিরপুর থেকে মোটরসাইকেল রেখে মেট্রোরেলে রওনা দেন অফিসের উদ্দেশ্যে। সচিবালয় মেট্রো স্টেশনে নামার পর রিকশা নেন। তাতেই যেন বাধে বিপত্তি। সামনে যে সড়ক বন্ধ। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে আন্দোলন অবরোধে সড়ক বন্ধ যান চলাচল। আধাঘণ্টায়ও কূলকিনারা না পেয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে রাজধানীতে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।

আজ বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ দিন। এমনিতেই বৃহস্পতিবার মানে ঢাকা শহরে যানবাহনের বাড়তি চাপ যানজট ভোগান্তি থাকে। তার মধ্যে ঢাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে। রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান। অন্যদিকে ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো গুলিস্তানে ডিএসসিসি কার্যালয়ের সামনের সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন চলছে।

সকাল ১০টা থেকে সরেজমিনে ও বিভিন্ন সড়কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর মহাখালী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, তেজগাঁও, মগবাজার, মালিবাগ, পল্টন, শাহবাগ, কাকরাইল মোড়, গুলিস্তান, মতিঝিলজুড়ে কোথাও তীব্র যানজট আবার কোথাও গাড়ির চাপ অনেক। অনেক স্থানের যাত্রীদের গণপরিবহন থেকে নেমে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হেঁটে যেতে দেখা যায়।

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে ফুলবাড়িয়া এলাকায় অটোরিকশায় আসতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে নাদিয়া শারমিন নামের একজন গণমাধ্যমকর্মীর। তিনি বলেন, সড়কের মাঝে মাঝে অবরোধ করে বন্ধ রাখা হয়েছে সড়ক। রিকশা চলার মতো রাস্তাও ফাঁকা নেই। অনেক মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

যানজটের বিষয়ে ট্রাফিক রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার মানেই বাড়তি চাপ। এদিন এমনিতেই সড়কে তীব্র চাপ তৈরি হয়। তারমধ্যে আজও গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থানে সড়কে যান চলাচল বন্ধ। এ কারণে সড়কে সকাল থেকেই চাপ। সে চাপ অধিকাংশ স্থানে যানজট তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, অফিসগামীযাত্রী, পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টায় বিভিন্ন পয়েন্টে ডাইভারশন করা হয়েছে। গুলিস্তান মতিঝিল গন্তব্য হলে নীলক্ষেত নিউমার্কেট সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানান তিনি।

ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলামোটর-হেয়ার রোড দিয়ে ডাইভারশন করা হয়েছে। কাকরাইলের সড়ক ক্লিয়ার করতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা শুনছেন না বরং তাদের সংখ্যা বাড়ছে। যানজট ভোগান্তিতে পড়া নগরবাসীকে বিকল্প সড়ক ও ডাইভারশন মেনে চলাচল অনুরোধ করা হচ্ছে।