১০:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

কর্মচারী অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৪:১৭:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • 20

ছবি: সংগৃহীত

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বুধবার (২৮ মে) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যে ন্যায্য দাবি অবৈধ কালাকানুন বা কালো আইন সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করি, আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে ফলাফল আসবে আশা করি এতে তারা (কর্মচারী) সন্তুষ্ট হবেন।’

ইতিমধ্যে অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে উত্থাপিত দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিষয়টির কুফল সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এই কালো বা নিবর্তনমূলক আইন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ ও কর্মচারীদের জন্য ফলপ্রসূ নতুন কোন কিছু বয়ে আনবে না।’

‘রাষ্ট্রের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে কর্মচারীদের মান-মর্যাদা ও কর্মস্থলের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুকূল কর্মপরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আমরা উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সচিব পর্যায়েও আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল বলেন, ‘গতকালকে সাতজন সচিবের সঙ্গে আমাদের যে বৈঠক হয়েছে, সেটার ধারাবাহিকতায় ওই সচিবরা আজকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয়ের সঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন। তারা পরিষ্কারভাবে কোনো কিছু না বললেও বিষয়টি আমাদের বুঝতে বাকি নেই, আমরা আশা করছি, তাদের এই আলোচনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় ইতিবাচক কোনো কিছু আমাদের জন্য এনে দিতে পারবেন।’

কর্মবিরতি প্রতিদিন সকাল ১০টা বেলা ১১টা পর্যন্ত

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, রাষ্ট্রের ক্রান্তিকাল অতিক্রম হতে চলছে। আপনারা জানেন সামনেই কোরবানির ঈদ এবং বাজেট ঘোষণার সময়। যেহেতু আমরা সাধারণ মানুষের সেবক। সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে আমরা সেবা প্রদান করে থাকি। সরকারি কর্মচারীরা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হয় আমরা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় এনেছি।’

এই কর্মচারী নেতা বলেন, ‘আমরা সব বিষয় চিন্তা-ভাবনায় রেখে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে আমরা জরুরি সেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সচিবালয়ে শুধু প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলতে থাকবে। মাঠ পর্যায়ে সব দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর এবং ডিসি অফিস, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘এর সঙ্গে সঙ্গে আপনাদেরকে একটি বিষয়ে অবহিত না করলেই নয়; সারাদেশে যে সব জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং যারা হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন, সেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাই-বোনদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে- আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যত কম সময় কর্মবিরতি পালন করতে পারেন, অভ্যন্তরীণভাবে আপনারা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

আরো পড়ুন : নয়াপল্টনে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ, নেতাকর্মীদের ঢল

‘তবে আমার প্রস্তাব আধা-ঘণ্টার বেশি নয়। যদি আরও কম সময় আপনারা কর্মবিরতি পালন করে সাধারণ মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করতে পারেন, সেই বিষয়টি বিবেচনার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো,’ যোগ করেন তিনি।

‘আমরা এর মধ্যেই উপদেষ্টা মহোদয়দের কাছে এ বিষয়ে যৌক্তিকতা আরও নিবিড়ভাবে বোঝানোর জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করব।’

প্রধান উপদেষ্টা আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাদিউল কবীর। অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে সবুজ সংকেত কিভাবে পেয়েছেন জানতে চাইলে- তিনি বলেন, ‘সার্ভিসে আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতার সূত্রটি আমরা অ্যাপ্লাই করেছি- কোন কাজের কোন আলোচনার কি ফলাফল আসতে পারে।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

কর্মচারী অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি

সর্বশেষ আপডেট : ০৪:১৭:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বুধবার (২৮ মে) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যে ন্যায্য দাবি অবৈধ কালাকানুন বা কালো আইন সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করি, আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে ফলাফল আসবে আশা করি এতে তারা (কর্মচারী) সন্তুষ্ট হবেন।’

ইতিমধ্যে অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে উত্থাপিত দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিষয়টির কুফল সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এই কালো বা নিবর্তনমূলক আইন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ ও কর্মচারীদের জন্য ফলপ্রসূ নতুন কোন কিছু বয়ে আনবে না।’

‘রাষ্ট্রের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে কর্মচারীদের মান-মর্যাদা ও কর্মস্থলের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুকূল কর্মপরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আমরা উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সচিব পর্যায়েও আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল বলেন, ‘গতকালকে সাতজন সচিবের সঙ্গে আমাদের যে বৈঠক হয়েছে, সেটার ধারাবাহিকতায় ওই সচিবরা আজকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয়ের সঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন। তারা পরিষ্কারভাবে কোনো কিছু না বললেও বিষয়টি আমাদের বুঝতে বাকি নেই, আমরা আশা করছি, তাদের এই আলোচনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় ইতিবাচক কোনো কিছু আমাদের জন্য এনে দিতে পারবেন।’

কর্মবিরতি প্রতিদিন সকাল ১০টা বেলা ১১টা পর্যন্ত

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, রাষ্ট্রের ক্রান্তিকাল অতিক্রম হতে চলছে। আপনারা জানেন সামনেই কোরবানির ঈদ এবং বাজেট ঘোষণার সময়। যেহেতু আমরা সাধারণ মানুষের সেবক। সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে আমরা সেবা প্রদান করে থাকি। সরকারি কর্মচারীরা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হয় আমরা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় এনেছি।’

এই কর্মচারী নেতা বলেন, ‘আমরা সব বিষয় চিন্তা-ভাবনায় রেখে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে আমরা জরুরি সেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সচিবালয়ে শুধু প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলতে থাকবে। মাঠ পর্যায়ে সব দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর এবং ডিসি অফিস, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘এর সঙ্গে সঙ্গে আপনাদেরকে একটি বিষয়ে অবহিত না করলেই নয়; সারাদেশে যে সব জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং যারা হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন, সেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাই-বোনদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে- আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যত কম সময় কর্মবিরতি পালন করতে পারেন, অভ্যন্তরীণভাবে আপনারা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

আরো পড়ুন : নয়াপল্টনে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ, নেতাকর্মীদের ঢল

‘তবে আমার প্রস্তাব আধা-ঘণ্টার বেশি নয়। যদি আরও কম সময় আপনারা কর্মবিরতি পালন করে সাধারণ মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করতে পারেন, সেই বিষয়টি বিবেচনার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো,’ যোগ করেন তিনি।

‘আমরা এর মধ্যেই উপদেষ্টা মহোদয়দের কাছে এ বিষয়ে যৌক্তিকতা আরও নিবিড়ভাবে বোঝানোর জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করব।’

প্রধান উপদেষ্টা আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাদিউল কবীর। অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে সবুজ সংকেত কিভাবে পেয়েছেন জানতে চাইলে- তিনি বলেন, ‘সার্ভিসে আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতার সূত্রটি আমরা অ্যাপ্লাই করেছি- কোন কাজের কোন আলোচনার কি ফলাফল আসতে পারে।’