পেহেলগামে হামলাকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে ধারণা করা হচ্ছে, যে কোনো সময় সামরিক সংঘাতে জড়াতে পারে দু’দেশ। বিশেষ করে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করায় ভারত সামরিক হামলা চালাতে পারে বলে মনে করছে পাকিস্তান।
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সব মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা
এমন আশঙ্কায় ১০ দিনের জন্য বন্ধ করা হয়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সব মাদ্রাসা । বৃহস্পতিবার (২ মে) এক সরকারি আদেশের বরাতে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এ ছাড়া পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রয়টার্সকে কর্মকর্তারা বলেছেন, গরম ও তাপপ্রবাহের জন্য মাদরাসাগুলোতে ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে হামলার আশঙ্কা থেকেই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান কাশ্মীরের ধর্মবিষয়ক দপ্তরের পরিচালক হাফিজ নাজির আহমেদ।
আরও পড়ুন : গর্জে উঠলেন পাক সেনাপ্রধান, কঠোর জবাবের হুমকি
তিনি জানান, উত্তেজনার আবহে পাকিস্তানের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে ভারতের সামরিক বাহিনী। নাজির আহমেদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা দুই ধরনের তাপ্রবাহের মুখোমুখী— একটির উৎস আবহাওয়া এবং অপরটির উৎস (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) নরেন্দ্র মোদি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা আজাদ কাশ্মীর ও গিলগিট-বাল্টিস্তান প্রশাসনের সব কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং সে বৈঠকে সর্বসম্মত ভাবে এই ছুটির সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
রয়টার্সকে তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, ভারতীয় বাহিনী মাদরাসাগুলোকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে। আমরা আমাদের মাদরাসার নিরপরাধ শিশুদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে চাইনা।’
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের দুই অঞ্চল আজাদ কাশ্মীর ও গিলগিট-বাল্টিস্তানে মোট ৪৪৫টি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬ হাজারেরও বেশি। শিক্ষা ব্যয় খুব কম হওয়ায় সাধারণ স্কুলগুলোর পাশাপাশি মাদরাসাশিক্ষাও জনপ্রিয় অঞ্চলটিতে।
খাবার মজুদের নির্দেশ
এ ছাড়া যুদ্ধ যে আসন্ন তার আভাস পাওয়া গেছে আগেই। এবার পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হকের এক নির্দেশনায় তা আরও জোরালো হলো। শুক্রবার (০২ মে) দেওয়া এক বক্তব্যে আজাদ কাশ্মিরের ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের দুই মাসের খাবার মজুদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আনোয়ারুল হকে জানান, সীমান্ত রেখার (এলওসি) কাছের ১৩টি নির্বাচনী এলাকার মানুষকে দুই মাসের খাবার মজুদ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকাগুলোর মানুষের খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যোগান নিশ্চিত রাখতে ১০০ কোটি রুপির ফান্ড গঠন করা হয়েছে।