০৪:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৮:৩৫:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
  • 15

ইসলামের অন্যতম তাৎপর্যমণ্ডিত ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত কোরবানি। এতে আছে আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক মহিমা। সামর্থ্যবান পুরুষ মহিলার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এটি আদায়ের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট নীতিমালা। সব ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। প্রয়োজন হয় ত্রুটিমুক্ত পশুর।

এটি ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীর যুগেই কোরবানি পালিত হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ
নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

কোরবানি করার জন্য সুস্থ, সবল ও ত্রুটিমুক্ত পশু নির্বাচন করা আবশ্যক। বড় ধরনের ত্রুটি আছে এমন পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। নিজে হেঁটে জবাইয়ের জায়গায় যেতে পারে না এমন অসুস্থ, শুকনো বা দুর্বল পশু দিয়েও কোরবানি শুদ্ধ হয় না।

হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

أَرْبَعٌ لاَ تَجُوزُ فِي الأَضَاحِي الْعَوْرَاءُ بَيِّنٌ عَوَرُهَا وَالْمَرِيضَةُ بَيِّنٌ مَرَضُهَا وَالْعَرْجَاءُ بَيِّنٌ ظَلْعُهَا وَالْكَسِيرُ الَّتِي لاَ تَنْقَى অর্থ: চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা বৈধ নয়, ১. যে পশু একচক্ষুহীন বা কানা এবং সেটির কানা হওয়াটা স্পষ্ট ২. স্পষ্ট অসুস্থ বা রোগগ্রস্ত পশু ৩. বাহ্যত দেখা যায় এমন ল্যাংড়া পশু এবং ৪. হাঁড় বেরিয়ে গেছে এমন দুর্বল পশু। (আবু দাউদ: ২৭৯৩)

পশুর যেসব ত্রুটির কারণে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

১. অন্ধ হওয়া: একেবারেই দেখতে পায় না এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

২. পঙ্গু হওয়া: পঙ্গুত্বের কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম, এক বা একাধিক পা দিয়ে ঠিকভাবে হাঁটতে পারে না এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

৩. গুরুতর আঘাত: কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে বা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

৪. দাঁত না থাকা: সব দাঁত পড়ে গেছে বা এত অধিক পড়ে গেছে যে খাবার চিবিয়ে খেতে অক্ষম, এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

আরও পড়ুন : কোরবানির পশুর যেসব অংশ খাওয়া নিষেধ

৫. শিং ভেঙে যাওয়া: যে পশুর শিঙ গোড়া থেকে ভেঙে গেছে এবং সে কারণে মস্তিস্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ওই পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। তবে শিং ভাঙ্গার কারণে মস্তিষ্কে যদি আঘাত না পৌঁছে, তাহলে ওই পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ। যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙ্গে গেছে বা শিং একেবারে উঠেইনি, সে পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ।

৬. লেজ বা কান কাটা পড়া: লেজ বা কান অর্ধেক বা তার বেশি অংশ কাটা পড়েছে এমন পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। তবে যদি কোনো পশুর কান জন্মগতভাবে ছোট হয় তাতে অসুবিধা নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

সর্বশেষ আপডেট : ০৮:৩৫:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

ইসলামের অন্যতম তাৎপর্যমণ্ডিত ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত কোরবানি। এতে আছে আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক মহিমা। সামর্থ্যবান পুরুষ মহিলার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এটি আদায়ের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট নীতিমালা। সব ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। প্রয়োজন হয় ত্রুটিমুক্ত পশুর।

এটি ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীর যুগেই কোরবানি পালিত হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ
নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

কোরবানি করার জন্য সুস্থ, সবল ও ত্রুটিমুক্ত পশু নির্বাচন করা আবশ্যক। বড় ধরনের ত্রুটি আছে এমন পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। নিজে হেঁটে জবাইয়ের জায়গায় যেতে পারে না এমন অসুস্থ, শুকনো বা দুর্বল পশু দিয়েও কোরবানি শুদ্ধ হয় না।

হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

أَرْبَعٌ لاَ تَجُوزُ فِي الأَضَاحِي الْعَوْرَاءُ بَيِّنٌ عَوَرُهَا وَالْمَرِيضَةُ بَيِّنٌ مَرَضُهَا وَالْعَرْجَاءُ بَيِّنٌ ظَلْعُهَا وَالْكَسِيرُ الَّتِي لاَ تَنْقَى অর্থ: চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা বৈধ নয়, ১. যে পশু একচক্ষুহীন বা কানা এবং সেটির কানা হওয়াটা স্পষ্ট ২. স্পষ্ট অসুস্থ বা রোগগ্রস্ত পশু ৩. বাহ্যত দেখা যায় এমন ল্যাংড়া পশু এবং ৪. হাঁড় বেরিয়ে গেছে এমন দুর্বল পশু। (আবু দাউদ: ২৭৯৩)

পশুর যেসব ত্রুটির কারণে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

১. অন্ধ হওয়া: একেবারেই দেখতে পায় না এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

২. পঙ্গু হওয়া: পঙ্গুত্বের কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম, এক বা একাধিক পা দিয়ে ঠিকভাবে হাঁটতে পারে না এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

৩. গুরুতর আঘাত: কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে বা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

৪. দাঁত না থাকা: সব দাঁত পড়ে গেছে বা এত অধিক পড়ে গেছে যে খাবার চিবিয়ে খেতে অক্ষম, এমন পশু কোরবানি করা যাবে না।

আরও পড়ুন : কোরবানির পশুর যেসব অংশ খাওয়া নিষেধ

৫. শিং ভেঙে যাওয়া: যে পশুর শিঙ গোড়া থেকে ভেঙে গেছে এবং সে কারণে মস্তিস্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ওই পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। তবে শিং ভাঙ্গার কারণে মস্তিষ্কে যদি আঘাত না পৌঁছে, তাহলে ওই পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ। যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙ্গে গেছে বা শিং একেবারে উঠেইনি, সে পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ।

৬. লেজ বা কান কাটা পড়া: লেজ বা কান অর্ধেক বা তার বেশি অংশ কাটা পড়েছে এমন পশু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। তবে যদি কোনো পশুর কান জন্মগতভাবে ছোট হয় তাতে অসুবিধা নেই।