০৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

সেই কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াত নেতা

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৭:৩৫:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • 21

ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অবসরকালীন ভাতার কাগজে সই না দেওয়ায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে‌ এক জামায়াত নেতার বিরু‌দ্ধে। এবার সেই অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন ওই কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে তিনি উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে হাত ধরে ক্ষমা চান। পরে সেই কর্মকর্তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন জামায়াত নেতারা।

এ সময় উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী, জামায়াতের সাবেক আমির ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী (নমিনি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জামায়াতকর্মী কাদের মোল্লাহ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতা কর্মীরাসহ উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স আতুয়ারা খাতুন অবসরের ইনক্রিমেন্টের বিলের জন্য চাপ দিচ্ছিল। তবে তার কিছু কাগজ ভুল থাকায় বিলে সাক্ষর করা হয়নি। জামায়াতের নেতারা আমাকে বিলে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য চাপ দিলে আমি অস্বীকৃতি জানাই। এ সময় তারা আমাকে মারধর করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমার অফিসে এসে উপস্থিত সবার সামনে আমার হাত ধরে ক্ষমা চান জামায়াত নেতা।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের জামায়াতের কর্মী কাদের মোল্লার স্ত্রীর কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কালক্ষেপণ করছিলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।

তিনি আরও বলেন, এরপর ওই কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে তার হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে কুশল বিনিময় করেছি। তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

রৌমারী উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী বলেন, ওই নার্সের স্বামী আমাদের দলের একজন কর্মী। তার স্ত্রীকে বিল প্রদান না করে ওই কর্মকর্তা হয়রানি করছিলেন। এ জন্য আমাদের দলের কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যান। আলোচনার এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরে আমি উপস্থিত থেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।

যা বলছেন জামায়াত নেতা

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী (নমিনি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, আমাদের উপস্থিতিতে জামায়াতের একজন হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়। পরে আমরা বিষয়টা মীমাংসা করে দিয়েছি। এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপু‌রে উপ‌জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যাল‌য়ে মারধরের এ ঘটনা ঘ‌টে। এ সময় ওই কর্মকর্তা‌কে রক্ষা কর‌তে‌ গি‌য়ে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া আহত হন। বিষয়‌টি নি‌য়ে উপ‌জেলাজু‌ড়ে চাঞ্চ‌ল্যের সৃ‌ষ্টি হয়।

অফিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গে‌ছে, রৌমারী উপ‌জেলা স্বাস্থ‌্য কম‌প্লে‌ক্সের সি‌নিয়র স্টাফ নার্স রৌমারী সদর ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতুয়ারা খাতুনের স্বামী কাদের মোল্লা উপজেলা একজন জামায়াত কর্মী। মঙ্গলবার দুপু‌রে তার দ‌লের জামায়াতের নেতাকর্মী‌কে নি‌য়ে স্ত্রীর অবসরকালীন ভাতার কাগজ পত্র নিয়ে উপ‌জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যাল‌য়ে যান।

এ সময় উপ‌জেলা জামায়া‌তের আমির হায়দার আলী, সাবেক আমির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকসহ উপজেলা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছি‌লেন।

আরো পড়ুন: আনন্দ সিনেমা হলের গোপন দরজা দিয়ে কোথায় যায় তরুণ-তরুণীরা ?

আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তে‌জিত হ‌য়ে জামায়া‌তের রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ ক‌য়েকজন নেতাকর্মী উপ‌জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধর করেন। এ সময় তা‌কে রক্ষা কর‌তে গি‌য়ে রৌমারী উপ‌জেলা স্বাস্থ‌্য কম‌প্লে‌ক্সের ক‌্যা‌শিয়ার রাজা মিয়া আহত হন।

উপ‌জেলা স্বাস্থ‌্য কমপ্লেক্সের ক‌্যা‌শিয়ার রাজা মিয়া ব‌লেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কলার ধরে ফেলে। সে সময় আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারধর করা হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

সেই কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াত নেতা

সর্বশেষ আপডেট : ০৭:৩৫:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অবসরকালীন ভাতার কাগজে সই না দেওয়ায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে‌ এক জামায়াত নেতার বিরু‌দ্ধে। এবার সেই অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন ওই কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে তিনি উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে হাত ধরে ক্ষমা চান। পরে সেই কর্মকর্তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন জামায়াত নেতারা।

এ সময় উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী, জামায়াতের সাবেক আমির ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী (নমিনি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জামায়াতকর্মী কাদের মোল্লাহ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতা কর্মীরাসহ উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স আতুয়ারা খাতুন অবসরের ইনক্রিমেন্টের বিলের জন্য চাপ দিচ্ছিল। তবে তার কিছু কাগজ ভুল থাকায় বিলে সাক্ষর করা হয়নি। জামায়াতের নেতারা আমাকে বিলে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য চাপ দিলে আমি অস্বীকৃতি জানাই। এ সময় তারা আমাকে মারধর করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমার অফিসে এসে উপস্থিত সবার সামনে আমার হাত ধরে ক্ষমা চান জামায়াত নেতা।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের জামায়াতের কর্মী কাদের মোল্লার স্ত্রীর কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কালক্ষেপণ করছিলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।

তিনি আরও বলেন, এরপর ওই কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে তার হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে কুশল বিনিময় করেছি। তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

রৌমারী উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী বলেন, ওই নার্সের স্বামী আমাদের দলের একজন কর্মী। তার স্ত্রীকে বিল প্রদান না করে ওই কর্মকর্তা হয়রানি করছিলেন। এ জন্য আমাদের দলের কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যান। আলোচনার এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরে আমি উপস্থিত থেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।

যা বলছেন জামায়াত নেতা

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী (নমিনি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, আমাদের উপস্থিতিতে জামায়াতের একজন হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়। পরে আমরা বিষয়টা মীমাংসা করে দিয়েছি। এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপু‌রে উপ‌জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যাল‌য়ে মারধরের এ ঘটনা ঘ‌টে। এ সময় ওই কর্মকর্তা‌কে রক্ষা কর‌তে‌ গি‌য়ে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া আহত হন। বিষয়‌টি নি‌য়ে উপ‌জেলাজু‌ড়ে চাঞ্চ‌ল্যের সৃ‌ষ্টি হয়।

অফিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গে‌ছে, রৌমারী উপ‌জেলা স্বাস্থ‌্য কম‌প্লে‌ক্সের সি‌নিয়র স্টাফ নার্স রৌমারী সদর ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতুয়ারা খাতুনের স্বামী কাদের মোল্লা উপজেলা একজন জামায়াত কর্মী। মঙ্গলবার দুপু‌রে তার দ‌লের জামায়াতের নেতাকর্মী‌কে নি‌য়ে স্ত্রীর অবসরকালীন ভাতার কাগজ পত্র নিয়ে উপ‌জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যাল‌য়ে যান।

এ সময় উপ‌জেলা জামায়া‌তের আমির হায়দার আলী, সাবেক আমির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকসহ উপজেলা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছি‌লেন।

আরো পড়ুন: আনন্দ সিনেমা হলের গোপন দরজা দিয়ে কোথায় যায় তরুণ-তরুণীরা ?

আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তে‌জিত হ‌য়ে জামায়া‌তের রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ ক‌য়েকজন নেতাকর্মী উপ‌জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধর করেন। এ সময় তা‌কে রক্ষা কর‌তে গি‌য়ে রৌমারী উপ‌জেলা স্বাস্থ‌্য কম‌প্লে‌ক্সের ক‌্যা‌শিয়ার রাজা মিয়া আহত হন।

উপ‌জেলা স্বাস্থ‌্য কমপ্লেক্সের ক‌্যা‌শিয়ার রাজা মিয়া ব‌লেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কলার ধরে ফেলে। সে সময় আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও মারধর করা হয়।