০৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

যে শর্তে হামলা বন্ধ করতে রাজি ইরান

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ১২:০০:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
  • 27

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েল যদি তাদের হামলা বন্ধ করে, তবে তেহরানও আত্মরক্ষার জন্য চালানো প্রতিক্রিয়ামূলক আক্রমণ বন্ধ করবে। তেহরানে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

যে শর্তে হামলা বন্ধ করতে রাজি ইরান

তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করছি। ইসরায়েল হামলা থামালেই আমরা উত্তেজনা হ্রাস করব।’ ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তার বক্তব্য সম্প্রচারিত হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ইরানে নিহত বেড়ে ২২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। রোববার (১৫ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর তেহেরান টাইমস

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হোসেইন কেরমানপুর বলেছেন, গত ৬৫ ঘণ্টায় ইরানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৪৪ জন নিহত হয়েছেন।

এক্স পোস্টে তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে এবং ১ হাজার ২৭৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতের ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের পাল্টা আক্রমণে ১০ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার রাতে ইরান প্রায় ৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার মধ্যে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র হাইফার তেল শোধনাগারে আঘাত হেনেছে। এই হামলায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরাও অংশ নিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন : ইরানে বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু

আরাঘচি বলেন, জায়োনিস্ট শাসকগোষ্ঠী আন্তর্জাতিক আইনের একটি নতুন রক্তরেখা অতিক্রম করেছে- তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েল এখন ইরানের ইসফাহান প্রদেশের একটি প্রতিরক্ষা স্থাপনা এবং শিরাজের একটি ইলেকট্রনিক্স কারখানা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের সাধারণ জনগণকে অস্ত্র উৎপাদন কারখানা ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনার আশপাশের এলাকা থেকে সরে যেতে বলেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলের হামলার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কোনো রকম হামলা চালায়, তবে তার ফল হবে ভয়াবহ।

পরিস্থিতির উত্তপ্ততা বিবেচনায় রেখে দুই দেশই আকাশসীমা আংশিকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন।

পরবর্তীতে প্রতিশোধ হিসেবে ইরানও শুক্রবার থেকে ইসরায়েলের একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

যে শর্তে হামলা বন্ধ করতে রাজি ইরান

সর্বশেষ আপডেট : ১২:০০:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েল যদি তাদের হামলা বন্ধ করে, তবে তেহরানও আত্মরক্ষার জন্য চালানো প্রতিক্রিয়ামূলক আক্রমণ বন্ধ করবে। তেহরানে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

যে শর্তে হামলা বন্ধ করতে রাজি ইরান

তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করছি। ইসরায়েল হামলা থামালেই আমরা উত্তেজনা হ্রাস করব।’ ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তার বক্তব্য সম্প্রচারিত হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ইরানে নিহত বেড়ে ২২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। রোববার (১৫ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর তেহেরান টাইমস

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হোসেইন কেরমানপুর বলেছেন, গত ৬৫ ঘণ্টায় ইরানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৪৪ জন নিহত হয়েছেন।

এক্স পোস্টে তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে এবং ১ হাজার ২৭৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতের ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের পাল্টা আক্রমণে ১০ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার রাতে ইরান প্রায় ৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার মধ্যে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র হাইফার তেল শোধনাগারে আঘাত হেনেছে। এই হামলায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরাও অংশ নিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন : ইরানে বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু

আরাঘচি বলেন, জায়োনিস্ট শাসকগোষ্ঠী আন্তর্জাতিক আইনের একটি নতুন রক্তরেখা অতিক্রম করেছে- তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েল এখন ইরানের ইসফাহান প্রদেশের একটি প্রতিরক্ষা স্থাপনা এবং শিরাজের একটি ইলেকট্রনিক্স কারখানা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের সাধারণ জনগণকে অস্ত্র উৎপাদন কারখানা ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনার আশপাশের এলাকা থেকে সরে যেতে বলেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলের হামলার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কোনো রকম হামলা চালায়, তবে তার ফল হবে ভয়াবহ।

পরিস্থিতির উত্তপ্ততা বিবেচনায় রেখে দুই দেশই আকাশসীমা আংশিকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন।

পরবর্তীতে প্রতিশোধ হিসেবে ইরানও শুক্রবার থেকে ইসরায়েলের একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।