০৫:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

কার সঙ্গে ভাগে কোরবানি দেওয়া যাবে না

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০১:৪৩:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • 46

কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

তাই কোরবানির মতো পূণ্যময় ইবাদতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা আবশ্যকীয়। নতুবা সামান্য ভুলের জন্য যদি কোরবানির মূল উদ্দেশ্যই বিনষ্ট হয়ে যায় তখন শুধু গোশত খাওয়াই বাকি থাকবে।

কোরবানির ঈদের আর বেশিদিন বাকি নেই। চলতি বছর চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে সৌদি আরবে ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৬ জুন। সেই হিসেবে বাংলাদেশে ৭ জুন ঈদুল আজহা পালিত হতে পারে। যারা সামর্থ্যবান, তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। তবে এই সামর্থ্যের ক্ষেত্রেও কিছু কথা থেকে যায়।

উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক

অনেক মুসল্লী আছেন, যারা পুরো একটা পশু কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন না। তারা সবসময় ভাগে পশু কোরবানি করে থাকেন। অনেক সময় পরিবারের সব ভাই-বোন মিলে বা এলাকার কয়েকজন মিলে একটি পশু কিনে থাকেন কোরবানির জন্য। কিন্তু এক্ষেত্রে, প্রশ্ন থেকে যায়, যাদের সঙ্গে কোরবানি দিচ্ছেন ভাগে, তাদের সঙ্গে কোরবানি দেওয়া যাবে কি না বা তাদের সঙ্গে কোরবানি দিলে তা সহিহ হচ্ছে কি না।

এই ভাগে বা শরিকে কোরবানি করার ব্যাপারে ইসলামে সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। বিধানে বলা হয়েছে ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা শুধু একজনই কোরবানি দিতে পারবে। এগুলো একাধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি করা সহিহ হবে না।

উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক হতে পারবে। সাতের অধিক শরিক হলে কারও কোরবানি সহিহ হবে না। এ সম্পর্কে সহিহ মুসলিম শরিফে হজরত জাবের (রা.) বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ করেছিলাম, তখন আমরা সাতজন একটি উট এবং একটি গরুতে শরিক হয়ে কোরবানি করেছি।

আরও পড়ুন : কোরবানি কাদের ওপর ফরজ? ইসলামে যা বলা আছে

উট, গরু ও মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যে কোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ।

এখন কত ভাগে দেওয়া যাবে সেটার যেমন বিধান রয়েছে, তেমনি কাদের সঙ্গে কোরবানি শরিকে দেওয়া যাবে সে কথাও বলা হয়েছে ইসলামে। অংশীদারদের কেউ যদি আল্লাহর হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে, শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে করে; তাহলে তার কোরবানি শুদ্ধ হবে না। এমনকি তাকে কেউ অংশীজন বানালে, তাদের (অংশীজনদের) কোরবানিও শুদ্ধ হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অংশীজন নির্বাচন করা জরুরি।

কেউ কেউ মনে করেন, যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়, তারা কোরবানি করতে পারবে না। এ ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক। বরং তারা কোরবানি করলে অধিক সওয়াব পাবেন। নিজের পক্ষ থেকে কোরবানি করা ওয়াজিব, তবে সন্তানের পক্ষ থেকে পিতার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। তবে পিতা যদি নিজের মাল থেকে নাবালগ ছেলের পক্ষ হয়ে কোরবানি করেন, তাহলে নফল হিসেবে গণ্য হবে। মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

কার সঙ্গে ভাগে কোরবানি দেওয়া যাবে না

সর্বশেষ আপডেট : ০১:৪৩:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

তাই কোরবানির মতো পূণ্যময় ইবাদতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা আবশ্যকীয়। নতুবা সামান্য ভুলের জন্য যদি কোরবানির মূল উদ্দেশ্যই বিনষ্ট হয়ে যায় তখন শুধু গোশত খাওয়াই বাকি থাকবে।

কোরবানির ঈদের আর বেশিদিন বাকি নেই। চলতি বছর চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে সৌদি আরবে ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৬ জুন। সেই হিসেবে বাংলাদেশে ৭ জুন ঈদুল আজহা পালিত হতে পারে। যারা সামর্থ্যবান, তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। তবে এই সামর্থ্যের ক্ষেত্রেও কিছু কথা থেকে যায়।

উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক

অনেক মুসল্লী আছেন, যারা পুরো একটা পশু কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন না। তারা সবসময় ভাগে পশু কোরবানি করে থাকেন। অনেক সময় পরিবারের সব ভাই-বোন মিলে বা এলাকার কয়েকজন মিলে একটি পশু কিনে থাকেন কোরবানির জন্য। কিন্তু এক্ষেত্রে, প্রশ্ন থেকে যায়, যাদের সঙ্গে কোরবানি দিচ্ছেন ভাগে, তাদের সঙ্গে কোরবানি দেওয়া যাবে কি না বা তাদের সঙ্গে কোরবানি দিলে তা সহিহ হচ্ছে কি না।

এই ভাগে বা শরিকে কোরবানি করার ব্যাপারে ইসলামে সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। বিধানে বলা হয়েছে ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা শুধু একজনই কোরবানি দিতে পারবে। এগুলো একাধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি করা সহিহ হবে না।

উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক হতে পারবে। সাতের অধিক শরিক হলে কারও কোরবানি সহিহ হবে না। এ সম্পর্কে সহিহ মুসলিম শরিফে হজরত জাবের (রা.) বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ করেছিলাম, তখন আমরা সাতজন একটি উট এবং একটি গরুতে শরিক হয়ে কোরবানি করেছি।

আরও পড়ুন : কোরবানি কাদের ওপর ফরজ? ইসলামে যা বলা আছে

উট, গরু ও মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যে কোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ।

এখন কত ভাগে দেওয়া যাবে সেটার যেমন বিধান রয়েছে, তেমনি কাদের সঙ্গে কোরবানি শরিকে দেওয়া যাবে সে কথাও বলা হয়েছে ইসলামে। অংশীদারদের কেউ যদি আল্লাহর হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে, শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে করে; তাহলে তার কোরবানি শুদ্ধ হবে না। এমনকি তাকে কেউ অংশীজন বানালে, তাদের (অংশীজনদের) কোরবানিও শুদ্ধ হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অংশীজন নির্বাচন করা জরুরি।

কেউ কেউ মনে করেন, যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়, তারা কোরবানি করতে পারবে না। এ ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক। বরং তারা কোরবানি করলে অধিক সওয়াব পাবেন। নিজের পক্ষ থেকে কোরবানি করা ওয়াজিব, তবে সন্তানের পক্ষ থেকে পিতার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। তবে পিতা যদি নিজের মাল থেকে নাবালগ ছেলের পক্ষ হয়ে কোরবানি করেন, তাহলে নফল হিসেবে গণ্য হবে। মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়।