প্রতিবারই নতুন শহর,নাম ও পরিচয় কিন্তু বিয়ের কনে একজনই। এভাবেই ভুয়া বিয়ের নাটক সাজিয়ে অভিনব কৌশলে ২৫ জন পুরুষকে বিয়ে করে লক্ষ লক্ষ টাকার গয়না ও নগদ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
একবার-দু’বার নয়, গত সাত মাসে প্রতারিত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পুরুষ। তবে এ বার তার খেলাতেই তাকে পরাস্ত করল পুলিশ। পুলিশের নকল বিয়ের জালেই ধরা পড়ল ‘লুটেরি দুলহান’ নামে পরিচিত প্রতারক অনুরাধা পাসওয়ান।
২৫ পুরুষকে বিয়ের নামে প্রতারণা
৩২ বছর বয়সী অনুরাধা পাসওয়ান ‘সাদামাটা গরিব কনের’ ছদ্মবেশে পুরুষদের ফাঁদে ফেলতেন। বেকার ভাইয়ের গল্প বলে মানুষের সহানুভূতি আদায় করে নিতেন। আর তার সঙ্গে থাকত একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।
পুলিশ জানায়, মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা অনুরাধা একটি ‘বিয়ে প্রতারণা চক্রের’ নেতৃত্বে ছিলেন। তার সহযোগীরা পাত্রদের কাছে ছবি ও প্রোফাইল পাঠিয়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতেন। মধ্যস্থতাকারী প্রতিটি বিয়ের জন্য প্রায় ২ লাখ রুপি করে নিতেন।
হিন্দু রীতিনীতি মেনে বিয়ে সম্পন্ন হতো বাড়িতে বা মন্দিরে। এরপর শুরু হতো প্রতারণার মূল অধ্যায়। শ্বশুরবাড়ি গিয়ে অল্প কিছুদিনেই এই নারী সবার মন জয় করে নিতেন। এরপর একদিন সুযোগ বুঝে খা বারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করে গয়না, টাকা ও দামি জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যেতেন।
আরও পড়ুন : একই হাসপাতালের ১৪ নার্স অন্তঃসত্ত্বা! যা জানা গেল
এই ২৫ জন প্রতারিত পুরুষের মধ্যে একজন, রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুরের বাসিন্দা বিষ্ণু শর্মা। গত ২০ এপ্রিল তিনি অনুরাধাকে বিয়ে করে মধ্যস্থতাকারীকে ২ লাখ রুপি দেন। এরপর বিয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যে অনুরাধা শর্মার পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পালিয়ে যান ১ লাখ ২৫ হাজার রুপির গয়না, ৩০ হাজার নগদ টাকা ও ৩০ হাজার টাকার একটি মোবাইল ফোন নিয়ে।
শর্মার অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে সাওয়াই মাধোপুর পুলিশ। এক কনস্টেবলকে সাজানো হয় বর হিসেবে।
পুলিশ জানায়, অনুসন্ধানে দেখা যায় বিয়ের সব কাগজপত্র জাল। কনস্টেবল ‘বর’ সেজে অনুরাধার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর বিয়ের স্থান ঠিক হয় আর সেখানেই অপেক্ষা করছিল পুলিশ। পরে অনুরাধাকে গ্রেফতার করা হয় মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে।
পুলিশ জানায়, অনুরাধার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রের একাধিক মামলা প্রক্রিয়াধীন। বাকি ভুক্তভোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
সূত্র: এনডিটিভি