রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যের (২৫) নিহতের ঘটনায় বিচার চাইলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদলের স্যার এ এফ রহমান হলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক সাম্য হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির নিশ্চিতের দাবি জানান।
সাম্যকে নিয়ে সারজিসের পোস্ট
পোস্টে সারজিস আলম লেখেন, ‘সময়ের সাথে সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে উঠেছে চাঁদাবাজি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মের আখড়া। অথচ এই উদ্যান সংলগ্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট এবং অফিস থাকা সত্ত্বেও তারা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশন না নিয়ে এসবের ভাগিদার হয়েছে।
যার ফলশ্রুতিতে আমরা আমাদের অনেক ভাই বোনকে বিপথে যেতে দেখেছি, একাধিক প্রাণনাশের ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি আরো লেখেন, ‘গতকাল সাম্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখেছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দ্রুত কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক আর বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে নিয়মিত সাঁড়াশি অভিযান চালানো হোক, উদ্যান এলাকা সম্পূর্ণ নজরদারিতে আনা হোক, অপ্রয়োজনীয় ইট পাথরের অবকাঠামোগুলোকে ভেঙে প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।
এদিকে সৌম্য হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সাম্য ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন : ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সেনাবাহিনীর সহায়তা পেতে হালনাগাদ নম্বর প্রকাশ
তিনি জানান, এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজনকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা কালী মন্দিরের পাশে তিন যুবক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাম্যর ওপর হামলা করেন। এতে হামলাকারীরাও আহত হন। তারা একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে দুজনকে আটক করে। এসময় পালিয়ে যান আরেক যুবক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আটক দুজনের পরিচয় ও বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
অন্যদিকে সাম্যের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জড়ো হতে থাকেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও চত্বরে মধ্যরাতেও নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়।