০৫:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০২:১৮:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
  • 16

ভারত-পাকিস্তানের চলমান সংঘাতের মধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেছে ২০২৫ আইপিএল। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে। শুক্রবার (৯ মে) এই সিদ্ধান্ত জানায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।

নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় আইপিএলের একটি ম্যাচ মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপরই জরুরি বৈঠকে বসে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকেই এলো বড় সিদ্ধান্ত।

নিরাপত্তার শঙ্কায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল

বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের খেলা ছিল। ম্যাচটি চলাকালীন সময়ে জম্মুতে পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়। যার জেরে উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আলো নিবিয়ে দেওয়া হয়। ফ্লাডলাইট নিভে যায় ধর্মশালা ক্রিকেট স্টেডিয়ামেরও। এর ফলে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।

নিরাপত্তা শঙ্কায় মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় আইপিএলের ম্যাচ। স্টেডিয়াম ছাড়ছেন দর্শকরা।

আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকের পরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আপাতত স্থগিত রাখার।

ক্রিকইনফো জানায়, ম্যাচ বাতিলের পর দু’দলের খেলোয়াড়দের বিশেষ ট্রেনে করে দিল্লিতে স্থানান্তর করা হয়। বিসিসিআই জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত টুর্নামেন্টের খেলা পুনরায় শুরুর কোনো সম্ভাবনা নেই।

আরও পড়ুন : হঠাৎ টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা রোহিত শর্মার

এর আগে ভারতে জাতীয় নির্বাচন কিংবা করোনা মহামারির সময়েও টুর্নামেন্টটি বন্ধের নজির ছিল না। সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল অন্যত্র। কিন্তু ভারত-পাক সংঘাতের মাঝে স্থগিত করা হলো জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগটি।

বিসিসিআইয়ের সূত্রের বরাতে গণমাধ্যম বলছে, দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এ কারণে টুর্নামেন্টটি আপাতত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তীতে কবে কখন আবার শুরু হবে সেটি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এর আগে টুর্নামেন্টটির ভবিষ্যৎ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় পিটিআইকে আইপিএলের সিইও অরুণ ধুমাল বলেছিলেন, ‘আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। সরকারের তরফে আমাদের কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে। সব পক্ষের কথা মাথায় রেখেই আগামী দিনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

পিএসএল  বাকি ম্যাচগুলো সরিয়ে নিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে

এদিকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)ও পিএসএল ২০২৫-এর বাকি ম্যাচগুলো সরিয়ে নিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে পিসিবি জানায়, পিএসএল-এর লিগ পর্বের বাকি চারটি ম্যাচ ও প্লে-অফ পর্বের সবগুলো ম্যাচ আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে। শিগগিরই তারিখ ও ভেন্যু ঘোষণা করা হবে।

ভারত ও পাকিস্তানে অবস্থানরত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের অনেকে টুর্নামেন্ট ছেড়ে দেশে ফিরতে চাইছেন বলে জানা গেছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) জানিয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত দুই দেশে অবস্থানরত ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

প্রসঙ্গত, আইপিএলের ১৮তম আসরে এখন পর্যন্ত মোট ৫৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে ধর্মশালার পরিত্যক্ত ম্যাচও রয়েছে। গ্রুপ পর্বে এখনো ১২টি ম্যাচ বাকি রয়েছে, যার মধ্যে লখনৌ (২টি), হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদ (৩টি), দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু (২টি), মুম্বাই ও জয়পুরে হওয়ার কথা ছিল। এরপর প্লে-অফের ম্যাচগুলো হায়দরাবাদ ও কলকাতায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

বিশ্বের দুই বৃহৎ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত ও স্থানান্তরের এ সিদ্ধান্ত ক্রিকেট বিশ্বের জন্য এক বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল

সর্বশেষ আপডেট : ০২:১৮:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

ভারত-পাকিস্তানের চলমান সংঘাতের মধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেছে ২০২৫ আইপিএল। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে। শুক্রবার (৯ মে) এই সিদ্ধান্ত জানায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।

নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় আইপিএলের একটি ম্যাচ মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপরই জরুরি বৈঠকে বসে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকেই এলো বড় সিদ্ধান্ত।

নিরাপত্তার শঙ্কায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল

বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের খেলা ছিল। ম্যাচটি চলাকালীন সময়ে জম্মুতে পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়। যার জেরে উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আলো নিবিয়ে দেওয়া হয়। ফ্লাডলাইট নিভে যায় ধর্মশালা ক্রিকেট স্টেডিয়ামেরও। এর ফলে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।

নিরাপত্তা শঙ্কায় মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় আইপিএলের ম্যাচ। স্টেডিয়াম ছাড়ছেন দর্শকরা।

আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকের পরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আপাতত স্থগিত রাখার।

ক্রিকইনফো জানায়, ম্যাচ বাতিলের পর দু’দলের খেলোয়াড়দের বিশেষ ট্রেনে করে দিল্লিতে স্থানান্তর করা হয়। বিসিসিআই জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত টুর্নামেন্টের খেলা পুনরায় শুরুর কোনো সম্ভাবনা নেই।

আরও পড়ুন : হঠাৎ টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা রোহিত শর্মার

এর আগে ভারতে জাতীয় নির্বাচন কিংবা করোনা মহামারির সময়েও টুর্নামেন্টটি বন্ধের নজির ছিল না। সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল অন্যত্র। কিন্তু ভারত-পাক সংঘাতের মাঝে স্থগিত করা হলো জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগটি।

বিসিসিআইয়ের সূত্রের বরাতে গণমাধ্যম বলছে, দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এ কারণে টুর্নামেন্টটি আপাতত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তীতে কবে কখন আবার শুরু হবে সেটি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এর আগে টুর্নামেন্টটির ভবিষ্যৎ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় পিটিআইকে আইপিএলের সিইও অরুণ ধুমাল বলেছিলেন, ‘আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। সরকারের তরফে আমাদের কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে। সব পক্ষের কথা মাথায় রেখেই আগামী দিনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

পিএসএল  বাকি ম্যাচগুলো সরিয়ে নিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে

এদিকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)ও পিএসএল ২০২৫-এর বাকি ম্যাচগুলো সরিয়ে নিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে পিসিবি জানায়, পিএসএল-এর লিগ পর্বের বাকি চারটি ম্যাচ ও প্লে-অফ পর্বের সবগুলো ম্যাচ আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে। শিগগিরই তারিখ ও ভেন্যু ঘোষণা করা হবে।

ভারত ও পাকিস্তানে অবস্থানরত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের অনেকে টুর্নামেন্ট ছেড়ে দেশে ফিরতে চাইছেন বলে জানা গেছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) জানিয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত দুই দেশে অবস্থানরত ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

প্রসঙ্গত, আইপিএলের ১৮তম আসরে এখন পর্যন্ত মোট ৫৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে ধর্মশালার পরিত্যক্ত ম্যাচও রয়েছে। গ্রুপ পর্বে এখনো ১২টি ম্যাচ বাকি রয়েছে, যার মধ্যে লখনৌ (২টি), হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদ (৩টি), দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু (২টি), মুম্বাই ও জয়পুরে হওয়ার কথা ছিল। এরপর প্লে-অফের ম্যাচগুলো হায়দরাবাদ ও কলকাতায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

বিশ্বের দুই বৃহৎ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত ও স্থানান্তরের এ সিদ্ধান্ত ক্রিকেট বিশ্বের জন্য এক বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।