০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন কাতারের

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৯:২৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • 31

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জাসেম আল থানি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দোহায় নিজ কার্যালয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস দেন।

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে কাতারের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তাঁর একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে মনোনীত করবেন। চলমান সংস্কার ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরো শক্তিশালীভাবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আস্থা প্রকাশ করেন শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, আমরা আপনার অব্যাহত নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখি।

কাতার সফর

প্রধান উপদেষ্টা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কূটনৈতিক, আর্থিক ও বিনিয়োগ খাতে কাতারের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে- দেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষ, বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন সুযোগ এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করা।

অধ্যাপক ইউনূস কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমাদের তরুণদের স্বপ্নের দেশ গড়তে আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন।’

শেখ মোহাম্মদ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য কাতারে একটি কারিগরি দল পাঠানোর আহ্বান জানান।

বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করা হয়। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা জনগণ যাতে মর্যাদার সঙ্গে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সকল সহায়তার আহ্বান জানান।

আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ আয়োজনে সহায়তা করার জন্য কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক ইউনূস।

রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয়

দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।

শেখ মোহাম্মদ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরালো করার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি এবং সমস্যার টেকসই সমাধানে কাতারের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন : পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

দুই নেতা গাজার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস দুঃখ প্রকাশ করেন যে, গাজার দুর্দশার বিষয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ অংশ এখনো নীরব। কাতারের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও গাজা সংকট কভার করার জন্য কাতার ভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরাকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ-সুবিধা প্রদানে কাতারের সহায়তা কামনা করেন।

তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেখ মোহাম্মদ এই অনুরোধ সানন্দে গ্রহণ করেন। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন কাতারের

সর্বশেষ আপডেট : ০৯:২৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জাসেম আল থানি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দোহায় নিজ কার্যালয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস দেন।

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে কাতারের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তাঁর একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে মনোনীত করবেন। চলমান সংস্কার ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে আরো শক্তিশালীভাবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আস্থা প্রকাশ করেন শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি। তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, আমরা আপনার অব্যাহত নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখি।

কাতার সফর

প্রধান উপদেষ্টা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কূটনৈতিক, আর্থিক ও বিনিয়োগ খাতে কাতারের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে- দেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষ, বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য নতুন সুযোগ এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করা।

অধ্যাপক ইউনূস কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমাদের তরুণদের স্বপ্নের দেশ গড়তে আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন।’

শেখ মোহাম্মদ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য কাতারে একটি কারিগরি দল পাঠানোর আহ্বান জানান।

বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করা হয়। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা জনগণ যাতে মর্যাদার সঙ্গে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সকল সহায়তার আহ্বান জানান।

আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ আয়োজনে সহায়তা করার জন্য কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক ইউনূস।

রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয়

দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।

শেখ মোহাম্মদ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরালো করার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি এবং সমস্যার টেকসই সমাধানে কাতারের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন : পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

দুই নেতা গাজার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস দুঃখ প্রকাশ করেন যে, গাজার দুর্দশার বিষয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ অংশ এখনো নীরব। কাতারের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও গাজা সংকট কভার করার জন্য কাতার ভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরাকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের নারী ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ-সুবিধা প্রদানে কাতারের সহায়তা কামনা করেন।

তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেখ মোহাম্মদ এই অনুরোধ সানন্দে গ্রহণ করেন। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।