লাউয়াছড়া, রেমা কালেঙ্গায় ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের অভ্যন্তরে বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি বিপজ্জনক কভারবিহীন বৈদ্যুতিক তারের প্রতিবাদ করায় চাকরি হারিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ পাল।
তার ওপর হওয়া অন্যায়ের তিন বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু আজও চাকরি ফেরত পাননি পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারী বিশ্বজিৎ।
বিশ্বজিৎ পাল হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে চুনারুঘাটে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে ২০২২ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
তার বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের পালপাড়ায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্বজিৎ কর্মচারী থাকার সময় স্থানীয় সাতছড়ি লাউয়াছড়া, সাতছড়ি ও রেমা-কালেঙ্গার ভেতর দিয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক তারে বানর ও হনুমান জাতীয় প্রাণী বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে আহত ও নিহত হতো।
আরও পড়ুন : ১০ লাখ টাকার এক পয়সাও কম হবে না, ছাত্র প্রতিনিধির অডিও ফাঁস
বন্যপ্রাণী বাঁচাতে এসব নিয়ে নিজে বাদী হয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্বজিৎ।
পরবর্তীতে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় বড় প্রকল্প গ্রহণ করে পুরো বনাঞ্চলের বৈদ্যুতিক তারে কভার লাগানো হয়।
ফলে তার ডিপার্টমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার উপর ক্ষিপ্ত হন এবং কৌশলে তাকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
বিশ্বজিৎ পালের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুতের সমিতির একজন কর্মচারী হয়েও সে কেন এই দুঃসাহসিক কাজ অর্থাৎ পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে কথা ও লেখালেখি করেছে সেজন্য তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ফেরত পানি সেই চাকরি।বর্তমানে সে মানববেতর জীবন-যাপন করছে। এছাড়া একটি শ্রমিক ফেডারেশনে সংযুক্ত থাকাও তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
আরও পড়ুন : গোপন ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই ডিসি বিপাকে
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বিশ্বজিৎ পালের কিছু সাথে আরো দুইজন শ্রমিককে বিধি বহির্ভূতভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বিশ্বজিৎ পাল শ্রম উপদেষ্টা তথা সরকারের কাছে ন্যায় বিচারের দাবি তুলেছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান জানান, তার চাকরি যাওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সে যে বন ও বন্যপ্রাণীর জন্য কাজ করেছে সেটি প্রশংসনীয়। বিষয়টি আমাদের আরইবি কর্তৃপক্ষ দেখতে পারে।
এভাবে একজন ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাক্টিভিস্টের চাকরিচ্যুতির ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্তের দাবি রাখে বলে উল্লেখ করেছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ইউএনও মো. রবিন মিয়া।
তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের অধীনস্থ নয়। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।