০৪:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

ঈদের দিনে বৃষ্টি হলে যেভাবে কোরবানির প্রস্তুতি নেবেন

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৯:০৫:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
  • 35

এখন গ্রীষ্মকাল। এই গরমের মাঝেই দেখা গেছে শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। প্রায়ই হুটহাট বৃষ্টি। বেশ কয়েক দিন ধরে নিম্নচাপের প্রভাবে পড়েছে ঝুম বৃষ্টি। এর মধ্যেই চলে এসেছে কোরবানির ঈদ। ঈদ মানেই খুশির ঝলক, ঈদ মানেই আনন্দ। আর ঈদুল আজহার দিনে সকালে কোরবানি দেওয়ার আনন্দের আমেজও বেশ উপভোগ্য।

পবিত্র ঈদের নামাজে আত্মনিয়োগে আর ঘরে ঘরে কোরবানির প্রস্তুতির ব্যস্ততা বেশ রোমাঞ্চকর। আবার এর মধ্যেই যদি আকাশভরে ওঠে কালো মেঘে, আর নেমে আসে ঝিরঝিরে বৃষ্টি তাহলে কোরবানির প্রস্তুতিতে ভাট পড়ে। ঈদের খুশির আনন্দ আর মনে থাকে না। বাধা হয়ে দাঁড়ায় আল্লাহর ওয়াস্তে কুরবানি দেওয়ার কাজে। তাতে অবশ্য ঠেকে থাকে না কোনো কিছুই। একটা চ্যালেঞ্জ থাকে।

ঈদে বৃষ্টি হলে যেভাবে কোরবানির প্রস্তুতি নেবেন

এ বছর বর্ষা একটু আগেই এসেছে বলে মনে হয়। এর মধ্যে আবহাওয়া অফিসও বলছে— ঈদের দিন বৃষ্টি হতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নিই, ঈদের দিনে বৃষ্টি হলে কোরবানির প্রস্তুতি আমরা কীভাবে নেব, তা জেনে নেওয়া যাক।

প্রথমেই আমরা অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করব। ঈদের দিন যদি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে কোরবানির জায়গা সুরক্ষিত রাখতে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা ভীষণ জরুরি। ত্রিপল, পলিথিন কিংবা ক্যানভাস দিয়ে ছাউনি তৈরি করে রাখলে পশু জবাই ও কাটাকাটির কাজ বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে। সে জন্য ছাউনির নিচে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে গরম কম লাগবে এবং কাজ করতেও স্বস্তি মিলবে।

আরও পড়ুন : পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

এ ছাড়া কোরবানির জন্য উঁচু ও নিরাপদ স্থান প্রয়োজন হবে। বৃষ্টির দিনে নিচু জায়গায় কোরবানি দিলে পানি জমে গিয়ে রক্ত, বর্জ্য ও কাদা মিশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হবে। তাই কুরবানির জন্য এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু এবং সহজে পানি বেরিয়ে যেতে পারে।

আর সঠিক ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। বৃষ্টি হলে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয় নিচু জায়গায় পানি জমে থাকা। এতে কোরবানির সময় পশুর রক্ত ও বর্জ্য যদি জমা পানির সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে চারপাশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হবে। তাই আগে থেকেই বাড়ির ড্রেনেজব্যবস্থা মেরামত করে নিতে হবে। যাতে সহজেই পানি নিষ্কাশন হয়।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে

আবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। বৃষ্টির দিন মানেই কাদা, পিচ্ছিল মাটি ও ভেজা পরিবেশ। আর সে জন্য কোরবানির মাংস যেন ময়লা মাটিতে না পড়ে, তাই সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। মাংস কাটার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে পলিথিন বা স্যাঁতসেঁতে নিরোধক চাদর বিছিয়ে নিতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি, সাবান, হ্যান্ডগ্লাভস ও জীবাণুনাশক হাতের কাছেই রাখতে হবে। যারা মাংস কাটাকাটি ও ভুঁড়ি পরিষ্কারের কাজ করবেন, তারা যেন ভেজা জামাকাপড় পরে না থাকেন এবং প্রয়োজনে রেইনকোট ব্যবহার করেন।

এ ছাড়া সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ ভাগ করে নিতে হবে। বৃষ্টির দিনে কোরবানির কাজ একা বা স্বল্পসংখ্যক লোক দিয়ে সম্পন্ন করা সহজ নয়। তাই দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করতে আগে থেকেই একটি দল গঠন করা উচিত। যেখানে কেউ কাটাকাটির দায়িত্বে থাকবে, কেউ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার, আবার কেউ মাংস বণ্টনের দায়িত্বে থাকবে।

আর মাংস সংরক্ষণের জন্য শুকনো ও নিরাপদ জায়গা নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃষ্টির সময় চারপাশে পরিবেশ ভেজা থাকায় মাংস দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই মাংস কাটার পর যত দ্রুত সম্ভব তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সেই সঙ্গে মাংস বণ্টনের দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। মাংস বণ্টনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিন বয়স্ক, প্রতিবেশী ও অসহায়-গরিবদের, যেন তারা সময়মতো তা রান্না ও সংরক্ষণ করতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

ঈদের দিনে বৃষ্টি হলে যেভাবে কোরবানির প্রস্তুতি নেবেন

সর্বশেষ আপডেট : ০৯:০৫:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

এখন গ্রীষ্মকাল। এই গরমের মাঝেই দেখা গেছে শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। প্রায়ই হুটহাট বৃষ্টি। বেশ কয়েক দিন ধরে নিম্নচাপের প্রভাবে পড়েছে ঝুম বৃষ্টি। এর মধ্যেই চলে এসেছে কোরবানির ঈদ। ঈদ মানেই খুশির ঝলক, ঈদ মানেই আনন্দ। আর ঈদুল আজহার দিনে সকালে কোরবানি দেওয়ার আনন্দের আমেজও বেশ উপভোগ্য।

পবিত্র ঈদের নামাজে আত্মনিয়োগে আর ঘরে ঘরে কোরবানির প্রস্তুতির ব্যস্ততা বেশ রোমাঞ্চকর। আবার এর মধ্যেই যদি আকাশভরে ওঠে কালো মেঘে, আর নেমে আসে ঝিরঝিরে বৃষ্টি তাহলে কোরবানির প্রস্তুতিতে ভাট পড়ে। ঈদের খুশির আনন্দ আর মনে থাকে না। বাধা হয়ে দাঁড়ায় আল্লাহর ওয়াস্তে কুরবানি দেওয়ার কাজে। তাতে অবশ্য ঠেকে থাকে না কোনো কিছুই। একটা চ্যালেঞ্জ থাকে।

ঈদে বৃষ্টি হলে যেভাবে কোরবানির প্রস্তুতি নেবেন

এ বছর বর্ষা একটু আগেই এসেছে বলে মনে হয়। এর মধ্যে আবহাওয়া অফিসও বলছে— ঈদের দিন বৃষ্টি হতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নিই, ঈদের দিনে বৃষ্টি হলে কোরবানির প্রস্তুতি আমরা কীভাবে নেব, তা জেনে নেওয়া যাক।

প্রথমেই আমরা অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করব। ঈদের দিন যদি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে কোরবানির জায়গা সুরক্ষিত রাখতে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা ভীষণ জরুরি। ত্রিপল, পলিথিন কিংবা ক্যানভাস দিয়ে ছাউনি তৈরি করে রাখলে পশু জবাই ও কাটাকাটির কাজ বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে। সে জন্য ছাউনির নিচে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে গরম কম লাগবে এবং কাজ করতেও স্বস্তি মিলবে।

আরও পড়ুন : পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না

এ ছাড়া কোরবানির জন্য উঁচু ও নিরাপদ স্থান প্রয়োজন হবে। বৃষ্টির দিনে নিচু জায়গায় কোরবানি দিলে পানি জমে গিয়ে রক্ত, বর্জ্য ও কাদা মিশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হবে। তাই কুরবানির জন্য এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু এবং সহজে পানি বেরিয়ে যেতে পারে।

আর সঠিক ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। বৃষ্টি হলে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয় নিচু জায়গায় পানি জমে থাকা। এতে কোরবানির সময় পশুর রক্ত ও বর্জ্য যদি জমা পানির সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে চারপাশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হবে। তাই আগে থেকেই বাড়ির ড্রেনেজব্যবস্থা মেরামত করে নিতে হবে। যাতে সহজেই পানি নিষ্কাশন হয়।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে

আবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। বৃষ্টির দিন মানেই কাদা, পিচ্ছিল মাটি ও ভেজা পরিবেশ। আর সে জন্য কোরবানির মাংস যেন ময়লা মাটিতে না পড়ে, তাই সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। মাংস কাটার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে পলিথিন বা স্যাঁতসেঁতে নিরোধক চাদর বিছিয়ে নিতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি, সাবান, হ্যান্ডগ্লাভস ও জীবাণুনাশক হাতের কাছেই রাখতে হবে। যারা মাংস কাটাকাটি ও ভুঁড়ি পরিষ্কারের কাজ করবেন, তারা যেন ভেজা জামাকাপড় পরে না থাকেন এবং প্রয়োজনে রেইনকোট ব্যবহার করেন।

এ ছাড়া সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ ভাগ করে নিতে হবে। বৃষ্টির দিনে কোরবানির কাজ একা বা স্বল্পসংখ্যক লোক দিয়ে সম্পন্ন করা সহজ নয়। তাই দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করতে আগে থেকেই একটি দল গঠন করা উচিত। যেখানে কেউ কাটাকাটির দায়িত্বে থাকবে, কেউ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার, আবার কেউ মাংস বণ্টনের দায়িত্বে থাকবে।

আর মাংস সংরক্ষণের জন্য শুকনো ও নিরাপদ জায়গা নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃষ্টির সময় চারপাশে পরিবেশ ভেজা থাকায় মাংস দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই মাংস কাটার পর যত দ্রুত সম্ভব তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সেই সঙ্গে মাংস বণ্টনের দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। মাংস বণ্টনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিন বয়স্ক, প্রতিবেশী ও অসহায়-গরিবদের, যেন তারা সময়মতো তা রান্না ও সংরক্ষণ করতে পারেন।