০৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৯:০৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
  • 27

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক। ছবি : সংগৃহীত

দেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনায়’ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয়।

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের আলোচনা দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার রোডম্যাপ নিয়ে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গ্রহণযোগ্য ও দ্রুত নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। আজকের আলোচনায় এটি কীভাবে এবং কত দ্রুত সম্ভব—সেই বিষয়েই কথা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় এই বৈঠকের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক এজেন্ডার প্রয়োজন নেই।’

‘বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখন হলো—আমরা কীভাবে এগোব এবং কীভাবে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্রে ফিরতে পারব।’

বিএনপি নেতা বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ‘এটাই কেন্দ্রীয় বিষয় এবং আমি নিশ্চিত আজকের আলোচনায় তা আসবে।’

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ইচ্ছা নিয়ে প্রকাশিত খবরে দেশ সংকটে পড়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, বিএনপি এই পরিস্থিতিকে সংকট হিসেবে দেখছে না।


তিনি বলেন, দেশের এখন সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার এবং সংসদ—যা একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে।

এটাই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আমরা বর্তমানে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছি, তা কাটিয়ে উঠতে পারি।

গত ১৬ বছরে জনগণের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে খসরু বলেন, তারা এখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপেক্ষায় রয়েছেন।

বিএনপি কি আগের বৈঠকে অসন্তোষের পর এবার সন্তুষ্ট হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, ‘এটা আমাদের সন্তুষ্টির বিষয় নয়।’

‘আমরা রাজনীতি করি জনগণের সন্তুষ্টির জন্য। আমরা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাই। জনগণ চায় তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত করতে—এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

 

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন?

অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি ইঙ্গিত দেন, নির্বাচন ডিসেম্বরের আগেই হতে পারে। আমরা কেন ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করব?

অন্য এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, দেশের চলমান সংকট ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির একমাত্র সমাধান হলো গণতান্ত্রিক রূপান্তর।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৫ বছর ধরে স্বৈরতন্ত্রের অধীনে ছিল। তাই এখন একমাত্র সমাধান গণতন্ত্রে রূপান্তর। দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।’

গত ৯ মাসের ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে জাতির উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে ড. মঈন বলেন, এই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার গান গাইতে শুরু করেছে—৫ আগস্টের রূপান্তরমূলক ঘটনার পর থেকে।

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট ছিল প্রতিটি নাগরিকের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন—১৫ বছরের জুলুম ও স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্তির দিন। এটি ছিল গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সূচনা… এই রূপান্তরই বর্তমান অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র

পথ।

‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে এই সত্য উপলব্ধি করতে হবে, বুঝতে হবে ও গ্রহণ করতে হবে’, যোগ করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি

সর্বশেষ আপডেট : ০৯:০৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

দেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনায়’ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয়।

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের আলোচনা দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার রোডম্যাপ নিয়ে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গ্রহণযোগ্য ও দ্রুত নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। আজকের আলোচনায় এটি কীভাবে এবং কত দ্রুত সম্ভব—সেই বিষয়েই কথা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় এই বৈঠকের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক এজেন্ডার প্রয়োজন নেই।’

‘বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখন হলো—আমরা কীভাবে এগোব এবং কীভাবে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্রে ফিরতে পারব।’

বিএনপি নেতা বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ‘এটাই কেন্দ্রীয় বিষয় এবং আমি নিশ্চিত আজকের আলোচনায় তা আসবে।’

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ইচ্ছা নিয়ে প্রকাশিত খবরে দেশ সংকটে পড়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, বিএনপি এই পরিস্থিতিকে সংকট হিসেবে দেখছে না।


তিনি বলেন, দেশের এখন সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার এবং সংসদ—যা একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে।

এটাই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আমরা বর্তমানে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছি, তা কাটিয়ে উঠতে পারি।

গত ১৬ বছরে জনগণের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে খসরু বলেন, তারা এখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপেক্ষায় রয়েছেন।

বিএনপি কি আগের বৈঠকে অসন্তোষের পর এবার সন্তুষ্ট হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, ‘এটা আমাদের সন্তুষ্টির বিষয় নয়।’

‘আমরা রাজনীতি করি জনগণের সন্তুষ্টির জন্য। আমরা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাই। জনগণ চায় তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত করতে—এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

 

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন?

অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি ইঙ্গিত দেন, নির্বাচন ডিসেম্বরের আগেই হতে পারে। আমরা কেন ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করব?

অন্য এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, দেশের চলমান সংকট ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির একমাত্র সমাধান হলো গণতান্ত্রিক রূপান্তর।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৫ বছর ধরে স্বৈরতন্ত্রের অধীনে ছিল। তাই এখন একমাত্র সমাধান গণতন্ত্রে রূপান্তর। দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।’

গত ৯ মাসের ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে জাতির উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে ড. মঈন বলেন, এই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার গান গাইতে শুরু করেছে—৫ আগস্টের রূপান্তরমূলক ঘটনার পর থেকে।

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট ছিল প্রতিটি নাগরিকের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন—১৫ বছরের জুলুম ও স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্তির দিন। এটি ছিল গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সূচনা… এই রূপান্তরই বর্তমান অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র

পথ।

‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে এই সত্য উপলব্ধি করতে হবে, বুঝতে হবে ও গ্রহণ করতে হবে’, যোগ করেন তিনি।