০৩:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

কোরবানির পশু কেনার সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০২:৫১:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • 38

ছবি: সংগৃহীত

কোরবানি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। যা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ্যের মধ্যে একটি। ১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত দিনগুলোতে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। পশু জবাইয়ের মাধ্যমে কোরবানি করতে হয়। কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য কোরবানির পশু সুস্থ, সবল ও দৃশ্যমান কোনো শারীরিক ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন— প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কোরবানির বিধান নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে সেই চতুষ্পদ জন্তু জবাই করার সময়, যা তিনি তাদের জীবিকা হিসেবে দান করেছেন। (সূরা হজ, আয়াত : ৩৪)

কোরবানির পশু নির্বাচনের সময় শুধু দামের দিকে না তাকিয়ে তার শারীরিক গুণাবলি, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং শরিয়াহর দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করাও একান্ত জরুরি।

পশু নির্বাচন করার সময় চেষ্টা করা উচিত যেন সেটি হয়— সুস্থ ও রোগমুক্ত। বাহ্যিকভাবে আকর্ষণীয়, অর্থাৎ দেখতে ভালো। হৃষ্টপুষ্ট ও ভালো মানের। কোনো অঙ্গহানি বা বড় শারীরিক ত্রুটি নেই এমন।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) শিংযুক্ত, মোটা-তাজা একটি মেষ কোরবানি করেন, যার চোখ, চেহারা ও পা ছিল মিটমিটে কালো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩১২৮)

ইসলামী শরিয়াহ নির্দিষ্ট কিছু ত্রুটির কথা বলেছে, যা থাকলে পশু কোরবানির উপযোগী বিবেচিত হবে না। সেগুলো হলো—

সম্পূর্ণ অন্ধ : যে পশু একেবারে চোখে দেখে না।

প্রকট রোগাক্রান্ত : যে পশুর শরীরে অসুস্থতা স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

চলাফেরায় অক্ষম (পঙ্গু): যার পা বা অঙ্গ কাজ করে না এবং চলাফেরা করতে কষ্ট হয়।

গুরুতর আহত : যার অঙ্গ ভাঙা বা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। (তিরমিজি: ১৪৯৭)

দাঁতের সমস্যা : যদি পশুটির দাঁত এতটাই পড়ে যায় যে সে ঠিকভাবে খাবার চিবাতে পারে না।

শিং সম্পূর্ণ গোড়া থেকে ভাঙা : যাতে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে অর্ধেক ভাঙা বা জন্মগতভাবে শিং না থাকলে সমস্যা নেই। (রদ্দুল মুহতার, ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)

কান বা লেজ অর্ধেক বা তার বেশি কাটা : এমন হলে কোরবানি বৈধ নয়। তবে যদি অর্ধেকের কম কাটা হয় অথবা জন্মগতভাবে ছোট হয়, তাহলে চলবে। (তিরমিজি, হেদায়া)

কোরবানির পশু কেনার সময় সতর্কতা

কোরবানির পশু কেনার আগে ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত তার চোখ, কান, লেজ এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক আছে কি না।

হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের আদেশ করতেন যেন আমরা কোরবানির পশুর কান ও চোখ ভালোভাবে যাচাই করি। তিনি নিষেধ করতেন এমন পশু দ্বারা কোরবানি করতে, যার কান কাটা, ছেঁড়া বা ছিদ্র করা। (সুনানে আবু দাউদ: ২৮০৪)

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

কোরবানির পশু কেনার সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

সর্বশেষ আপডেট : ০২:৫১:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

কোরবানি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। যা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ্যের মধ্যে একটি। ১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত দিনগুলোতে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। পশু জবাইয়ের মাধ্যমে কোরবানি করতে হয়। কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য কোরবানির পশু সুস্থ, সবল ও দৃশ্যমান কোনো শারীরিক ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন— প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কোরবানির বিধান নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে সেই চতুষ্পদ জন্তু জবাই করার সময়, যা তিনি তাদের জীবিকা হিসেবে দান করেছেন। (সূরা হজ, আয়াত : ৩৪)

কোরবানির পশু নির্বাচনের সময় শুধু দামের দিকে না তাকিয়ে তার শারীরিক গুণাবলি, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং শরিয়াহর দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করাও একান্ত জরুরি।

পশু নির্বাচন করার সময় চেষ্টা করা উচিত যেন সেটি হয়— সুস্থ ও রোগমুক্ত। বাহ্যিকভাবে আকর্ষণীয়, অর্থাৎ দেখতে ভালো। হৃষ্টপুষ্ট ও ভালো মানের। কোনো অঙ্গহানি বা বড় শারীরিক ত্রুটি নেই এমন।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) শিংযুক্ত, মোটা-তাজা একটি মেষ কোরবানি করেন, যার চোখ, চেহারা ও পা ছিল মিটমিটে কালো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩১২৮)

ইসলামী শরিয়াহ নির্দিষ্ট কিছু ত্রুটির কথা বলেছে, যা থাকলে পশু কোরবানির উপযোগী বিবেচিত হবে না। সেগুলো হলো—

সম্পূর্ণ অন্ধ : যে পশু একেবারে চোখে দেখে না।

প্রকট রোগাক্রান্ত : যে পশুর শরীরে অসুস্থতা স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

চলাফেরায় অক্ষম (পঙ্গু): যার পা বা অঙ্গ কাজ করে না এবং চলাফেরা করতে কষ্ট হয়।

গুরুতর আহত : যার অঙ্গ ভাঙা বা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। (তিরমিজি: ১৪৯৭)

দাঁতের সমস্যা : যদি পশুটির দাঁত এতটাই পড়ে যায় যে সে ঠিকভাবে খাবার চিবাতে পারে না।

শিং সম্পূর্ণ গোড়া থেকে ভাঙা : যাতে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে অর্ধেক ভাঙা বা জন্মগতভাবে শিং না থাকলে সমস্যা নেই। (রদ্দুল মুহতার, ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)

কান বা লেজ অর্ধেক বা তার বেশি কাটা : এমন হলে কোরবানি বৈধ নয়। তবে যদি অর্ধেকের কম কাটা হয় অথবা জন্মগতভাবে ছোট হয়, তাহলে চলবে। (তিরমিজি, হেদায়া)

কোরবানির পশু কেনার সময় সতর্কতা

কোরবানির পশু কেনার আগে ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত তার চোখ, কান, লেজ এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক আছে কি না।

হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের আদেশ করতেন যেন আমরা কোরবানির পশুর কান ও চোখ ভালোভাবে যাচাই করি। তিনি নিষেধ করতেন এমন পশু দ্বারা কোরবানি করতে, যার কান কাটা, ছেঁড়া বা ছিদ্র করা। (সুনানে আবু দাউদ: ২৮০৪)