নব্বইয়ের দশকের দাপুটে নায়িকা শাবনূর। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ঢালিউডে কাজ করলেও এক যুগের বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়া বসবাস করেন এই অভিনেত্রী। সেখান থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ছবি-ভিডিও ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেন এ গ্ল্যামার কুইন।
এবার সেই সিডনি থেকেই দুঃসংবাদ দিলেন এ চিত্রনায়িকা। মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটার সময় পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পেয়েছেন। এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিজেই জানিয়েছেন এই ঢালিউড তারকা।
সিডনি থেকেই দুঃসংবাদ দিলেন শাবনূর
শাবনূর পায়ে আঘাত পাওয়ার ব্যাপারে বলেন, আমি মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে ল্যাকেম্বার রাস্তায় হাঁটছিলাম। এ সময় অসাবধাণতাবশত ফুটপাত থেকে হঠাৎ করেই পড়ে যাই। তখন পা মচকে যায়। হাঁটুর চামড়াও কিছুটা ছিলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আঘাতের কারণে ব্যথায় এমন অবস্থা হয়েছিল, ওঠার মতো কোনো শক্তি ছিল না। পরে হেল্প নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাই। তারপর জানতে পারি পায়ের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর পা প্লাস্টার করা হয়। ব্যথানাশক ওষুধও দেওয়া হয়েছে। আর এখন ক্রাচে ভর করে হাঁটতে হচ্ছে আমার।
এদিকে এ নায়িকা জানিয়েছেন, কাজের সময় আর কখনও মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না। তার ভাষ্যমতে―সমাজের জন্য আমার এই দুর্ঘটনা একটি বার্তা। ব্যথা পাওয়ার পর বোধ হয়েছে, জীবনে কখনও কোথাও হাঁটতে-চলতে গিয়ে মোবাইল ফোন দেখব না। গাড়ি চালানোর সময়ও মোবাইল ফোন দেখব না।
শনিবার (৮ মে) এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা শাবনূর। তারপর পা প্লাস্টার করিয়েছেন। আপাতত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করছেন। চিকিৎসক দুই সপ্তাহ পায়ে প্লাস্টার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নব্বইয়ের দশকে শাবনূরের চলচ্চিত্রে যাত্রা
নব্বইয়ের দশকে শাবনূরের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে প্রয়াত নির্মাতা এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। এই চলচ্চিত্রে শাবনূরের বিপরীতে অভিনয় করেন সাব্বির।
১৯৯৪ সালে জহিরুল হকের ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে সালমান শাহ’র বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন শাবনূর। এই চলচ্চিত্রটির পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই অভিনেত্রীকে। একের পর এক সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন ঢালিউডের এই ‘স্বপ্নের নায়িকা’।
সালমান শাহ’র ২৭টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১৪টিতেই জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাবনূর। তাদের জুটি ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল জুটি। তাদের বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই দর্শক নন্দিত ও ব্যবসাসফল। সালমান শাহ’র মৃত্যুর পর নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, মান্না ও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হয়েছেন শাবনূর।
আরও পড়ুন : ইসলামের ছায়াতলে লুবাবা, এ পরিবর্তন শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শাবনূর ১৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘ভালোবেসে বউ আনবো’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘পৃথিবী তোমার আমার’, ‘বিয়ের ফুল’, ‘আমি তোমারি’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘নারীর মন’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিঁড়ে’, ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘এ মন চায় যে’, ‘ফুল নেবো না অশ্রু নেব’, ‘দিল তো পাগল’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘শ্বশুর বাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘ভালোবাসা কারে কয়’, ‘সুন্দরী বধু’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘নসিমন’, ‘ব্যাচেলর’, ‘ফুলের মত বউ’, ‘চার সতীনের ঘর’, ‘দুই নয়নের আলো’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘নিরন্তর, ‘আমার প্রাণের স্বামী’ ইত্যাদি।
২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘দুই নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাবনূর। এছাড়া ‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রের জন্য ২০০৩ সালে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন এই অভিনেত্রী।