আইফোনের জনপ্রিয়তা বিশ্বের সব জায়গায়। সব বয়সী এবং শ্রেণি-পেশার মানুষের শখ থাকে আইফোন ব্যবহার করার। আইফোনের ডিজাইন, ক্যামেরায় সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ হোন ব্যবহারকারীরা। বিশ্বের অন্যতম দামি স্মার্টফোন হচ্ছে অ্যাপলের আইফোন। এর ফিচার, ক্যামেরা, ডিজাইন, দাম সবকিছু মিলিয়েই এটি অন্য সংস্থার ফোন থেকে আলাদা। অনেকেই আবার এটিকে সামাজিক অবস্থান বা স্ট্যাটাসের প্রতীক মনে করেন। তবে মন খারাপ করার মতো খবর হলো, সম্প্রতি মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল আইফোনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
সোমবার (১২ মে) মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, চলতি বছরের শরতে আইফোনের যে নতুন মডেলগুলো আসবে, সেগুলোর দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে অ্যাপল। দাম বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন আইফোনের ফিচার ও ডিজাইনেও পরিবর্তন আনতে চাচ্ছে কোম্পানিটি। আর এই খবরে বাজারে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে। প্রিমার্কেট ট্রেডিংয়ে অ্যাপলের শেয়ারের দাম প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আইফোনের দাম বাড়ানো হলেও অ্যাপল চায় না কেউ মনে করুক-চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির কারণে এই দাম বাড়ছে। যদিও অ্যাপলের বেশিরভাগ পণ্য চীনে তৈরি, তবুও প্রতিষ্ঠানটি চাইছে মূল্যবৃদ্ধির পেছনে অন্য কারণ তুলে ধরতে।
তবে রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলেও অ্যাপল কোনো মন্তব্য করেনি।
চলমান পরিস্থিতি: শুল্ক, উৎপাদন স্থানান্তর ও ডিজাইন পরিবর্তন
আইফোনের দাম বাড়ানোর অন্যতম কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা, যার ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে অ্যাপল নানান নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। প্রতিষ্ঠানটি দাম বাড়ানোর পেছনে মুনাফা অর্জনের চেয়ে রাজনৈতিক চাপ এড়ানো এবং মার্কিন ক্রেতাদের আস্থা বজায় রাখাহীন বিষয়ক চিন্তাভাবনা করছে।
বাণিজ্য উত্তেজনা আরও বাড়ানোর সঙ্গে ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে অ্যাপল। আইফোনের উৎপাদনকে ভারতে স্থানান্তরের মাধ্যমে শুল্ক চাপ থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে চেষ্টা করছে।
দাম বৃদ্ধির সম্ভাব্য মাত্রা
বর্তমানে আইফোন ১৬ সিরিজের মূল মডেলের দাম ৭৯৯ ডলার হলেও, আমদানি শুল্কসহ তার মোট খরচ বৃদ্ধি পেয়ে ১,১৪২ ডলার পর্যন্ত যেতে পারে। এ হিসাব মানে দাম বৃদ্ধির হার ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে, যা বাজারকে তৎপরতা দেখাতে বাধ্য করবে।
নতুন ফিচারের প্রতিশ্রুতি ও বাজারে প্রভাব
অ্যাপল নতুন আইফোনের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তৈরি করতে বেশ কিছু নতুন ফিচার এবং ডিজাইন পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে। উন্নত প্রযুক্তির AI ফিচার, অতিস্লিম ডিজাইন, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, এবং হাই-এন্ড ক্যামেরা আপগ্রেড তাদের নতুন আইফোনের অন্যতম আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হতে পারে।
আরও পড়ুন : ফেসবুক রিলসে ভিউ বাড়ানোর উপায়, জানুুন গোপন মন্ত্র
এছাড়া, দাম বৃদ্ধি শুধু অ্যাপলের জন্য নয়; এটি বাজারে অন্যান্য প্রতিযোগীদেরও সুযোগ করে দিতে পারে। স্যামসাং, গুগল এবং অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড নির্মাতারা এ পরিস্থিতিতে নিজেদের বাজার শেয়ার বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে অ্যাপলের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করছে এ সব ফিচারগুলোর কার্যকারিতা এবং গ্রাহকদের গ্রহণযোগ্যতার উপর।
রাজনৈতিক চাপ ও বাজার পরিস্থিতি
নতুন দাম বৃদ্ধির ফলে অ্যাপলকে রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলা করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি আমাজনের ‘হল’ ইউনিট আমদানি খরচ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে যার ফলে অ্যাপলকে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
অ্যাপল কোম্পানি তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজনৈতিক বিতর্ক এড়াতে বিশেষভাবে সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। তাদের জন্য এই পরিস্থিতিতে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আইফোনের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ কি?
আইফোনের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা, যা উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে।
আইফোন ১৬ সিরিজের দাম কত হতে পারে?
বর্তমানে আইফোন ১৬ সিরিজের দাম ৭৯৯ ডলার, যা নতুন শুল্ক ও ব্যয়ের কারণে ১,১৪২ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
অ্যাপল কি নতুন ফিচার আনছে?
হ্যাঁ, অ্যাপল তাদের নতুন আইফোনে উন্নত AI ফিচার, অতিস্লিম ডিজাইন এবং হাই-এন্ড ক্যামেরাসহ একাধিক নতুন ফিচার রাখার পরিকল্পনা করছে।
রাজনৈতিক চাপ কীভাবে অ্যাপলের উপর প্রভাব ফেলছে?
রাজনৈতিক চাপ অ্যাপলের ব্যবসার সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে, যা কোম্পানির বাজার ভিত্তিক গোলাপের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
অ্যাপল কি চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেবে?
অ্যাপল ইতোমধ্যে ভারতে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যা শুল্ক চাপ থেকে একটি উপায় হতে পারে।