০১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

ঘন ঘন মাথা ব্যথা? কীভাবে বুঝবেন এটা সাধারণ, না ব্রেন টিউমার? জেনে নিন পদ্ধতি

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৪:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • 15

প্রতীকী ছবি

কমবেশি সবারই কোনও না কোনও সময়ে মাথাব্যথা হয়। স্ট্রেস, অতিরিক্ত পরিশ্রম, ঠান্ডা, আবহাওয়ার পরিবর্তন, জ্বর, চোখের সমস্যার মতো নানা কারণে মাথায় ব্যথা হতে পারে। তবে সাধারণ মাথাব্যথা বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয় না। কিছু ক্ষণ বাদেই সেরে যায়। কিন্তু মাথায় রাখবেন, ব্রেন টিউমরের-ও প্রাথমিক লক্ষণ কিন্তু মাথা ব্যথা।

ফলে আপনি যদি মাঝেমধ্যেই মাথাব্যথায় ভোগেন, তাহলে প্রথমেই জেনে নিন, সাধারণ মাথাব্যথা আর ব্রেন টিউমরের কারণে হওয়া মাথাব্যথার মধ্যে ফারাক কোথায়?

কীভাবে বুঝবেন মাথাব্যথা সাধারণ মাথাব্যথা নাকি ব্রেন টিউমর বাসা বেঁধেছে শরীরে? সেই পদ্ধতি জানালেন মার্কিন চিকিৎসক ড. বেবিং চেন। তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডালে এই দুই ধরনের মাথাব্যথার পার্থক্য বুঝিয়েছেন খুব সহজভাবে।

ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনের অনুযায়ী, আমেরিকান চিকিৎসক ড. বেবিং চেন বলছেন, সাধারণ মাথাব্যথা যে-কোনও মানুষেরই হতে পারে, এতে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু মাথাব্যথার সময় যদি দুটি বিশেষ উপসর্গ দেখেন, তবে সাবধান! এটিকে ‘রেড সিগন্যাল’ হিসেবে ধরা উচিত। মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তপাত বা ব্রেন টিউমারের ইঙ্গিত হতে পারে। কী সেই দুটি বিশেষ উপসর্গ?

ড. চেন বলেন, যদি মাথাব্যথা হঠাৎ করে শুরু হয় এবং মনে হয় যেন পুরো শরীর কেঁপে উঠেছে, তাহলে তা ভয়ের। দ্বিতীয় উপসর্গ হল, মাথাব্যথা যদি অনেক ক্ষণ স্থায়ী হয়, তবে সাবধান। এটি মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তপাত বা টিউমরের লক্ষণ হতে পারে। এটি তখন ঘটে যখন মস্তিষ্কের ভিতরের টিস্যুগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই ধরনের মাথাব্যথাকে “থান্ডারক্ল্যাপ হেডেক” বলা হয়। মনে হয়, আচমকা কেউ যেন মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। গোটা শরীর কাঁপতে থাকে।

‘থান্ডারক্ল্যাপ হেডেক’-এর অর্থ হল, মাথার ভিতরের কোনও রক্তনালী ফেটে গিছে এবং রক্তপাত শুরু হয়েছে। এর ফলে মানুষ দীর্ঘ সময়ের জন্য প্যারালাইসড হয়ে পড়তে পারে, এমনকি কোমায় চলে যাওয়া বা মৃত্যুও হতে পারে।

আরো পড়ুন: সকালে খালি পেটে পানি পান, হাতেনাতে যেসব সুফল মেলে

ড. চেন বলেছেন, যদি মাথায় তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, তবে তা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণে হতে পারে। এমন অবস্থায় পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস) হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এই পরিস্থিতিতে ঘাড়ে লকড-ইন সিনড্রোম দেখা দিতে পারে, ঘাড় সামান্যতমটুকুও নাড়ানো যায় না।

ড. চেন সতর্ক করে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে ভুলেও ঘাড়ে কোনও ঘরোয়া চিকিৎসা প্রয়োগ উচিত নয়। ব্যথা কমাতে অনেকেই ঘাড় এদিক-ওদিক মোচড়ানোর চেষ্টা করেন। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ঘাড়ে লকড-ইন সিনড্রোম দেখা দেওয়ার পর ঘাড় জোর করে এদিক-ওদিক মোচড়ানোর চেষ্টা করলে ঘাড়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া রক্তনালীগুলো ব্লক হয়ে যেতে পারে, ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ড. চেন বলেন, মানুষ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে একেবারেই গুরুত্ব দেন না- তা হল ঘুম। যদি যথেষ্ট পরিমাণে ঘুম হয়, তবে এ ধরনের বিপদের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

ঘন ঘন মাথা ব্যথা? কীভাবে বুঝবেন এটা সাধারণ, না ব্রেন টিউমার? জেনে নিন পদ্ধতি

সর্বশেষ আপডেট : ০৪:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

কমবেশি সবারই কোনও না কোনও সময়ে মাথাব্যথা হয়। স্ট্রেস, অতিরিক্ত পরিশ্রম, ঠান্ডা, আবহাওয়ার পরিবর্তন, জ্বর, চোখের সমস্যার মতো নানা কারণে মাথায় ব্যথা হতে পারে। তবে সাধারণ মাথাব্যথা বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয় না। কিছু ক্ষণ বাদেই সেরে যায়। কিন্তু মাথায় রাখবেন, ব্রেন টিউমরের-ও প্রাথমিক লক্ষণ কিন্তু মাথা ব্যথা।

ফলে আপনি যদি মাঝেমধ্যেই মাথাব্যথায় ভোগেন, তাহলে প্রথমেই জেনে নিন, সাধারণ মাথাব্যথা আর ব্রেন টিউমরের কারণে হওয়া মাথাব্যথার মধ্যে ফারাক কোথায়?

কীভাবে বুঝবেন মাথাব্যথা সাধারণ মাথাব্যথা নাকি ব্রেন টিউমর বাসা বেঁধেছে শরীরে? সেই পদ্ধতি জানালেন মার্কিন চিকিৎসক ড. বেবিং চেন। তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডালে এই দুই ধরনের মাথাব্যথার পার্থক্য বুঝিয়েছেন খুব সহজভাবে।

ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনের অনুযায়ী, আমেরিকান চিকিৎসক ড. বেবিং চেন বলছেন, সাধারণ মাথাব্যথা যে-কোনও মানুষেরই হতে পারে, এতে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু মাথাব্যথার সময় যদি দুটি বিশেষ উপসর্গ দেখেন, তবে সাবধান! এটিকে ‘রেড সিগন্যাল’ হিসেবে ধরা উচিত। মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তপাত বা ব্রেন টিউমারের ইঙ্গিত হতে পারে। কী সেই দুটি বিশেষ উপসর্গ?

ড. চেন বলেন, যদি মাথাব্যথা হঠাৎ করে শুরু হয় এবং মনে হয় যেন পুরো শরীর কেঁপে উঠেছে, তাহলে তা ভয়ের। দ্বিতীয় উপসর্গ হল, মাথাব্যথা যদি অনেক ক্ষণ স্থায়ী হয়, তবে সাবধান। এটি মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তপাত বা টিউমরের লক্ষণ হতে পারে। এটি তখন ঘটে যখন মস্তিষ্কের ভিতরের টিস্যুগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই ধরনের মাথাব্যথাকে “থান্ডারক্ল্যাপ হেডেক” বলা হয়। মনে হয়, আচমকা কেউ যেন মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। গোটা শরীর কাঁপতে থাকে।

‘থান্ডারক্ল্যাপ হেডেক’-এর অর্থ হল, মাথার ভিতরের কোনও রক্তনালী ফেটে গিছে এবং রক্তপাত শুরু হয়েছে। এর ফলে মানুষ দীর্ঘ সময়ের জন্য প্যারালাইসড হয়ে পড়তে পারে, এমনকি কোমায় চলে যাওয়া বা মৃত্যুও হতে পারে।

আরো পড়ুন: সকালে খালি পেটে পানি পান, হাতেনাতে যেসব সুফল মেলে

ড. চেন বলেছেন, যদি মাথায় তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, তবে তা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণে হতে পারে। এমন অবস্থায় পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস) হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এই পরিস্থিতিতে ঘাড়ে লকড-ইন সিনড্রোম দেখা দিতে পারে, ঘাড় সামান্যতমটুকুও নাড়ানো যায় না।

ড. চেন সতর্ক করে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে ভুলেও ঘাড়ে কোনও ঘরোয়া চিকিৎসা প্রয়োগ উচিত নয়। ব্যথা কমাতে অনেকেই ঘাড় এদিক-ওদিক মোচড়ানোর চেষ্টা করেন। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ঘাড়ে লকড-ইন সিনড্রোম দেখা দেওয়ার পর ঘাড় জোর করে এদিক-ওদিক মোচড়ানোর চেষ্টা করলে ঘাড়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া রক্তনালীগুলো ব্লক হয়ে যেতে পারে, ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ড. চেন বলেন, মানুষ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে একেবারেই গুরুত্ব দেন না- তা হল ঘুম। যদি যথেষ্ট পরিমাণে ঘুম হয়, তবে এ ধরনের বিপদের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরি।