০৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কারিগরি শিক্ষার্থীদের

  • ঢাকা ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৫:২৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • 18

সামনে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে জানিয়েছেন কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সাথে বসেছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পায়নি।

আজকের এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। ফলে আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব। আমাদের দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ব্রিফিং

ব্রিফিংয়ে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেন, আজকের বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন কোনোভাবেই সন্তুষ্ট নই। আমাদেরকে ডেকে তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলন একত্রিতভাবে সিদ্ধান্তক্রমে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচির দিকে যাবে।

খুব দ্রুতই এ কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হবে।

তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলবে। জনদুর্ভোগ যতটা সম্ভব কমিয়ে আমরা আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করবো। বর্তমানে ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল রয়েছে। যদি আমাদের হার্ডলাইনে যেতে হয় সেটি আমরা পরবর্তীতে জানিয়ে দেবো।

আরও পড়ুন : সারাদেশে ডিম-মুরগির খামার বন্ধ ঘোষণা

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের-এর ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের  ৬ দফা দাবি

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে।

অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু ও শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে যান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে পদোন্নতিতে ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের’ কোনো কোটা রাখা হবে না বলেও জানান।

ডিজি ও অধ্যক্ষের আশ্বাসের পরও সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা।

তারা দাবি করেন, প্রত্যেকটি দাবি পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

ছয় দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে রেলপথ ব্লকেডের ঘোষণা দেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

একই সঙ্গে তারা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে কর্মসূচি শিথিল করে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সেভ করুন

কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কারিগরি শিক্ষার্থীদের

সর্বশেষ আপডেট : ০৫:২৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

সামনে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে জানিয়েছেন কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সাথে বসেছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পায়নি।

আজকের এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। ফলে আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব। আমাদের দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ব্রিফিং

ব্রিফিংয়ে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেন, আজকের বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন কোনোভাবেই সন্তুষ্ট নই। আমাদেরকে ডেকে তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলন একত্রিতভাবে সিদ্ধান্তক্রমে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচির দিকে যাবে।

খুব দ্রুতই এ কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হবে।

তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলবে। জনদুর্ভোগ যতটা সম্ভব কমিয়ে আমরা আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করবো। বর্তমানে ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল রয়েছে। যদি আমাদের হার্ডলাইনে যেতে হয় সেটি আমরা পরবর্তীতে জানিয়ে দেবো।

আরও পড়ুন : সারাদেশে ডিম-মুরগির খামার বন্ধ ঘোষণা

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের-এর ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের  ৬ দফা দাবি

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে।

অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু ও শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে যান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে পদোন্নতিতে ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের’ কোনো কোটা রাখা হবে না বলেও জানান।

ডিজি ও অধ্যক্ষের আশ্বাসের পরও সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা।

তারা দাবি করেন, প্রত্যেকটি দাবি পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

ছয় দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে রেলপথ ব্লকেডের ঘোষণা দেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

একই সঙ্গে তারা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে কর্মসূচি শিথিল করে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা।